ইউপি নির্বাচনে ৫১৩ জন বিনা ভোটে পাস গণতন্ত্র হত্যার মহোৎসব
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫১৩ জন বিনা ভোটে পাসের ঘটনাকে গণতন্ত্র হত্যার সর্বনাশা মহোৎসব বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
বুধবার (৩ নভেম্বর) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একক প্রার্থী থাকায় বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদে বিনা ভোটে নির্বাচিত হচ্ছেন প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে দুই ধাপে ৫১৩ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এটা গণতন্ত্র হত্যার সর্বনাশা আয়োজন। এর মাধ্যমে সমাজে বিদ্বেষ, জিঘাংসা ও সহিংসতার বীজ রোপন করে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রতিযোগিতাবিহীন নির্বাচনেও ২২ জন মানুষের মূল্যবান জীবন বিনষ্ট হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আ স ম রব বলেন, এটা আমাদের দেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরল ঘটনা। স্থানীয় নির্বাচনে কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি। কীভাবে একটি দেশ সম্পূর্ণভাবে গণতন্ত্রের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ হচ্ছে তার সবচেয়ে বড় এক নিদর্শন। গণতন্ত্র হত্যায় অপহরণ, গুম ও ক্রসফায়ারের আতঙ্ক সরকারকে প্রণোদনা যুগিয়েছে।
তিনি বলেন, এসব নির্বাচনে অন্যকে প্রার্থী হতে না দেওয়া, প্রতিদ্বন্দ্বীকে নানা কৌশলের মাধ্যমে নির্বাচনে অযোগ্য করা, একপক্ষীয় নির্বাচনের আয়োজন করা, সরকার দলীয় প্রার্থীকে নির্বাচনে বিজয়ী দেখানোর জন্য নির্বাচনী নাটক অনুষ্ঠান সবকিছুই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রের মৌলবাণীর বিপরীত।
জেএসডি সভাপতি বলেন, সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য বিগত ১২ বছরে ন্যূনতম গণতন্ত্রও যেন টেকসই হতে না পারে তার সকল ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের সকল সম্ভাবনাকে অঙ্কুরে বিনাশ, বিরোধীদলকে বল প্রয়োগে দমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব স্থাপন করায় আজকের এই নির্বাচন বিহীন অপসংস্কৃতির দৌরাত্ম্য স্থাপিত হয়েছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রবিহীন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গণতান্ত্রিক লড়াই থেকেই বাঙালি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। সুতরাং গণতন্ত্রই হবে রাষ্ট্র পরিচালনা ও জাতীয়তাবাদ বিকাশের অন্যতম উৎস। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল দল ও মহলকে গণতন্ত্র হত্যার সরকারি মহোৎসবের বিরুদ্ধে গণজাগরণ গড়ে তোলার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
এইউএ/ওএফ