‘বিএনপি নির্বাচনেও যাবে না, সংলাপেও না’ —দলটির নেতাদের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আপনাদের কে ডেকেছে সংলাপে?

বুধবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না সেটা আপনাদের ব্যাপার। নির্বাচন সময়মত সংবিধান অনুসারে হবে। সময় আর স্রোত যেমন কারও জন্য অপেক্ষা করে না নির্বাচনও কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। বিএনপি নির্বাচনে এলো কি না সেটার ওপর নির্বাচন নির্ভর করে না।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন বড় বড় গলায় কথা বলছেন। যে নির্বাচনে অংশ নেব না, সংলাপেও যাব না। আপনাদের কে ডেকেছে সংলাপে? শেখ হাসিনা এত উদার, গতবার সংলাপ ডেকেছিলেন। আপনারা কী জবাবটা দিয়েছেন? সেই সংলাপের পর আপনাদের ভূমিকা কী ছিল? এবার আর কেউ আপনাদের সংলাপে ডাকছে না। নিজেরাই আগ বাড়িয়ে সংলাপের কথা বলেছেন।  

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেব আপনাকে পরিষ্কার বলে দিতে চাই, যতই হাক-ডাক করুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশে জাদুঘরে চলে গেছে। জাদুঘর থেকে তা আর ফিরবে না। নির্বাচন হবে পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মত সংবিধান মেনে।

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রাজনীতির মঞ্চে পুনর্বাসিত করেছেন মুক্তিযুদ্ধের মুখোশধারী জিয়াউর রহমান। কাজেই বিএনপি মুক্তিযোদ্ধার দল নয়, মুখোশধারী মুক্তিযোদ্ধার দল। এই দল গণতন্ত্রের দল নয়, বর্ণচোরা গণতন্ত্রের দল।

আওয়ামী লীগের এ শীর্ষ নেতা বলেন, আজকে সাম্প্রদায়িক শক্তি যে তাণ্ডব চালাচ্ছে, কিছুদিন আগেও চালিয়েছে। তার বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির ছাতাতলেই আজকে এরা আস্ফালন করছে। আজকে বাংলাদেশে আমাদের প্রথম শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষের যে চারা জিয়াউর রহমান বপন করেছিলেন তা আজকে ডাল-পালা বিস্তার করে ফেলেছে।

তিনি বলেন, আজকে জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম কথা বলেন। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৮১ সালের মে মাসে সেনা সদস্যেরই একটি বিদ্রোহী গ্রুপ জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ে কীভাবে সেই লাশ গেল তারপর আর সেই লাশের খবর নেই। ঢাকার কফিনে লাশ ছাড়া জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, ইতিহাসের কী করুণ পরিণতি দেখুন। ১৯৮৮ সালে আগস্ট মাসে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি জিয়াউল হক নিহত হন, বিমান দুর্ঘটনায়। আর জিয়াউর রহমানকে তার নিজস্ব লোকেরা হত্যা করে। একটা কফিন ঢাকায় আর একটা কফিন ইসলামাবাদের ফয়সান মসজিদের সামনে। দুটি কফিনই ফাঁকা, লাশ নেই। এখানে জিয়ার লাশ নেই আর ওখানে জিয়াউল হকের লাশ নেই। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, দলের কেন্দ্রীয় নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

এইউএ/এসকেডি