খালেদা জিয়া /ফাইল ছবি

চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বায়োপসির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসাও ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে, রিপোর্টের ফলাফল ইতিবাচক না-কি নেতিবাচক তা নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তার চিকিৎসক ও বিএনপির নেতারা।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শরীরের একটি অংশের চামড়া ফোসকার মতো (লাম্প বা চাকা) হয়ে ছিল। এর কারণ জানতে গত ২৫ অক্টোবর তার বায়োপসি করা হয়েছিল। অপারেশনের দুদিন পরেই পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চিকিৎসা শুরু করেন। বর্তমানে তার অবস্থা মোটামুটি ভালো। শরীরের তাপমাত্রাও স্বাভাবিক আছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ম্যাডামের অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। ওনার বায়োপসি রিপোর্টও এসেছে। সেই অনুযায়ী ম্যাডামের চিকিৎসাও শুরু হয়েছে।’      

বিএনপির নেতাদের দাবি, ২০১৮ সালে দুদকের মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তার কিডনি-লিভার সমস্যা, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটি ও চোখের সমস্যা আরও প্রকট হয়। কারণ কারাগারে তাকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে ২০২০ সালে ২৫ মার্চ পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার তার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দিলে তার উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ দেশে একসঙ্গে এতো রোগের চিকিৎসা করার মতো প্রযুক্তিগত ও ক্লিনিক্যাল সুবিধা নেই। এই কারণে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে বারবার অনুমতি চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার তাতে সাড়া দিচ্ছে না। 

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‌বয়সের কারণে আমাদের হাসপাতালে যাওয়া নিষেধ আছে। তাই তাকে (খালেদা জিয়া) দেখতে যেতে পারিনি। শুনেছি তার অবস্থা আগের মতোই আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বারবার তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুমতি দিতে সরকারের কাছে আবেদন করে আসছি। একটা আবেদন তো করাই আছে। দলের মহাসচিব কয়েকদিন আগেও তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। এর বাইরে আসলে তো আমাদের কিছু করার নেই।     

গত ১২ অক্টোবর ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার শরীরে জ্বর দেখা দিলে কয়েক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বারের মতো চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন। এর আগে করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে টানা ৫৪ দিন একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর প্রথমে পুরান ঢাকার বিশেষ কারাগার ও পরে কারাবন্দি অবস্থায় বিএসএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার ছয় মাসের সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর আরও তিন দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার। 

এএইচআর/ওএফ