হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তার শরীরের তাপমাত্রা আগের মতো ওঠানামার মধ্যেই আছে। 

চিকিৎসকরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে বিএনপির চেয়ারপারসন কিডনি-লিভার সমস্যা, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। এখন এর সঙ্গে প্রায়ই তার শরীরে জ্বর দেখা দেয়। গত দুই সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তার শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন নেই।

গত ২৫ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বায়োপসি করা হয়েছে। যদিও বায়োপসি রিপোর্ট নিয়ে বিএনপি এবং তার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। এ বিষয়ে উভয় পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- এটা একজন রোগীর প্রাইভেসির বিষয়। এটা নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডামের অবস্থা আগের মতোই আছে। এখনও বলার মতো কিছু হয়নি। ওনার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বলার মতো কিছু হলে আমরা জানাব।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার যে অপারেশন করা হয়েছে, সেটা কোনো রোগের নয়। তার শরীরের একটি জায়গা অস্বাভাবিক থাকায় সেটা কি তা জানতে বায়োপসি করা হয়েছে। সুতরাং এই অপারেশনের পরে তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। অপারেশনের পর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে নিয়ম করে হাসপাতালে দেখতে যান।

গত ১২ অক্টোবর ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার শরীরে জ্বর দেখা দিলে কয়েক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বারের মতো চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন। এর আগে করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে টানা ৫৪ দিন একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর প্রথমে পুরান ঢাকার বিশেষ কারাগার ও পরে কারাবন্দি অবস্থায় বিএসএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার ছয় মাসের সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর আরও তিন দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার।

এএইচআর/জেডএস