সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা ও পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কেন ব্যর্থ হলো তা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে।

সোমবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, সারা দেশে সহিসংতা রোধে কোনো সাফল্য নেই সরকারের। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে আমাদের। এখন সেই ঐতিহ্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীতে আমাদের সম্প্রীতির ইমেজ ধ্বংস হয়ে এখন নেতিবাচক ইমেজ তৈরি হচ্ছে। শারদীয় দুর্গাপূজায় কখনোই হামলার ঘটনা ঘটেনি, এখন কেন ঘটছে তাও অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের মানুষ ঐতিহ্যে বিশ্বাস করে, দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও হামলা পছন্দ করে না।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে একজন প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রধর্ম মানি না বলে, উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তার বক্তব্যে কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মানুষের অন্তরে আঘাত করেছে। ওই প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী হিসেবে সংবিধান সংরক্ষণের শপথ ভঙ্গ করেছেন। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখেছে। তাই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে ওই মন্ত্রী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কেউ যদি রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করতে চায়, জাতীয় পার্টি তা বিনা চ্যালেঞ্জ ছেড়ে দেবে না।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, রাসুল (সা.) ইহুদিদের সঙ্গে চুক্তি করে সবার ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। এটাই পৃথিবীর সর্ব প্রথম অসাম্প্রদায়িক চুক্তি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কখনও হামলার ঘটনা ঘটেনি। ধর্মনিরপেক্ষে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশ পরিচালনা করলেই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। বর্তমান সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে এক প্রতিমন্ত্রীর উস্কানিমূলক বক্তব্যের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হামলার যোগসূত্র আছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জাপা মহাসচিব।

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, মো. শফিকুল ইসলাম সেন্টু, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আক্তার, লিয়াকত হোসেন খোকা প্রমুখ।

এএইচআর/ওএফ