জ্বর না গেলেও স্থিতিশীল রয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা। জ্বর না যাওয়া আগের মতোই খাবারের রুচি কম রয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর।

বিএনপি ও চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে খালেদা জিয়ার কিডনির সমস্যা প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কারণেই তার শরীরের তাপমাত্রা সব সময় বেশি থাকছে। চিকিৎসকরা তাকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রেখেছে। প্রয়োজন পড়লে ওষুধ পরিবর্তন করা হচ্ছে।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে তার ছেলে তারেক রহমান ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়মিত আপডেট জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। মির্জা ফখরুল দুই দিন পর পর খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে গিয়ে দেখে আসেন।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডাম এখন মোটামুটি আছেন। তার শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছে। উনার তো অনেকগুলো অসুখ আছে, সেইগুলোর পরীক্ষা করে নিয়মিত ওষুধ দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ম্যাডাম কবে বাসায় ফিরতে পারবেন, সেটা তো নির্দিষ্ট করে এখনই বলা যাচ্ছে না। উনার বিভিন্ন অসুখ রয়েছে। সেইগুলোর চিকিৎসা চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার একজন চিকিৎসক বলেন, বর্তমানে ম্যাডাম কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। এর সঙ্গে জ্বর তো আছেই। আসলে জ্বর কোনো রোগ না। উনার বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে এই জ্বর আসছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি জ্বর নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে দলীয় নেতাদের বেশি যেতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ নেতারা হাসপাতালে গেলেই উনার পা ধরে সালাম করেন। ফলে, নেতাদের শারীরিক স্পর্শের কারণে অন্য কোনো ভাইরাসে তার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, হাসপাতালে গিয়ে ম্যাডামের পা ছুয়ে সালাম করে নেতাদের দোয়া চাওয়া নিয়ে একদিন রসিকতা  করে তার ব্যক্তিগত স্টাফ ফাতেমা বলেন- ম্যাডাম তো সারাদিন শুধু দোয়া করার উপরে থাকেন।     

এদিকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে একাধিকবার সরকারের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার। বিএনপির নেতারাও তাদের বক্তব্যে বারবার তাকে বিদেশে চিকিৎসা সুযোগ দিতে আহ্বান জানিয়ে আসছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- শর্ত সাপেক্ষ মুক্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই।   

করোনা থেকে সেরে ওঠার পর গত ১২ অক্টোবর আবারও খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সঙ্গে হাসপাতালে আছেন ব্যক্তিগত স্টাফ ফাতেমা বেগম ও সুমি।

এএইচআর/এনএফ