ব্র্যাকেটবন্দী দলের কাহিনি- শেষ পর্ব
নারীদের অংশগ্রহণের নিয়ম মানছে না ইসলামী দলগুলো
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ৩৯টি। এর মধ্যে ২৪টি দল ভেঙে ৩৯ টুকরা হয়ে ‘ব্র্যাকেটবন্দী’ হয়েছে। আর নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নেই এমন দল আছে অন্তত শতাধিক। এসব দলের মধ্যে বেশ কয়েকটি আবার গঠনের পর একাধিকবার ভাঙনের মুখে পড়েছে। কেন ভাঙছে, কেন ব্র্যাকেটবন্দী হচ্ছে— এ নিয়ে ঢাকা পোস্টের বিশেষ আয়োজন ‘ব্র্যাকেটবন্দী দলের কাহিনি’। নিজস্ব প্রতিবেদকআদিত্য রিমনের অনুসন্ধানে চার পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষটি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সবপর্যায়ে নারী নেতৃত্ব ৩৩ শতাংশ করার বাধ্যবাধকতার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছর (২০২০)। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলই এ শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো। এমনও দল আছে যাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে শুধুমাত্র একজন নারী সদস্য রয়েছেন
রাজনৈতিক দলগুলোর সবপর্যায়ে নারী নেতৃত্ব ৩৩ শতাংশ করার বাধ্যবাধকতার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছর (২০২০)। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলই এ শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো। এমনও দল আছে যাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে শুধুমাত্র একজন নারী সদস্য রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদে কোনো নারী নেই
‘খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা’র লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালের ৮ ডিসেম্বর শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এরপর কয়েকবার ভাঙনের মুখে পড়ে তারা। সর্বশেষ ২০০৫ সালে পদ-পদবির দ্বন্দ্বে ভাঙে দলটি।
‘খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা’র লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালের ৮ ডিসেম্বর শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এরপর কয়েকবার ভাঙনের মুখে পড়ে তারা। সর্বশেষ ২০০৫ সালে পদ-পদবির দ্বন্দ্বে ভাঙে দলটি
বর্তমানে ‘খেলাফত মজলিস’ নামে দুটি দল রয়েছে। দল দুটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান এবং খেলাফত মজলিস, আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক।
মাওলানা ইসহাকের খেলাফত মজলিস বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক। দলটির মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদের গত ২৪ এপ্রিল হেফাজতের মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। অন্যদিকে, করোনা আসার পর থেকে মাওলানা ইসহাক পাবনায় অবস্থান করছেন। অন্য নেতাকর্মীরা হেফাজতের মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে অনেকটা আত্মগোপনে আছেন। বর্তমানে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রেস বিজ্ঞপ্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে দলটির কার্যক্রম। দলের ৪৫ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদে কোনো নারী সদস্য নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলের আমির মাওলানা ইসহাক বলেন, ‘করোনা আসার পর থেকে আমি পাবনাতেই আছি। মাঝে দুবার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলাম। এখান থেকে ঢাকায় বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠিত দলের মিটিংগুলোতে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করি।
মামুনুল হকের মজলিসে ৩ নারী সদস্য থাকার দাবি
মাওলানা হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন নিবন্ধিত দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। ৪১ সদস্যবিশিষ্ট এর কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মামুনুল হকসহ আট নেতা বর্তমানে হেফাজতের বিভিন্ন মামলায় কারাগারে আছেন। হেফাজতের কর্মসূচি ঘিরে রাজনীতিতে সক্রিয় দলটির গত এপ্রিল থেকে তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। পল্টন এলাকায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেই নেতাকর্মীদের আনাগোনা। দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিন নারীনেত্রী রয়েছেন বলে দাবি দলটির একাধিক নেতার।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে দলে ভাঙন ধরে। বর্তমানে একই নামে দুটি দল রয়েছে। দলগুলো হলো- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (কাসেমী), ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা জিয়া উদ্দীন
দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল আজিজ এ প্রসঙ্গে বলেন, দলের মহাসচিবসহ অন্য নেতারা কারাগারে থাকায় কর্মসূচি নেই। আগামীতে সবকিছু স্বাভাবিক হলে দলের কার্যক্রমও শুরু হবে। নরসিংদী, সিলেট মহানগর, হবিগঞ্জ, ফেনীসহ দেশের ৩০টির অধিক জেলায় দলের কার্যক্রম রয়েছে বলেও দাবি তার।
জমিয়তে নারী আছে, তবে সংখ্যা জানেন না নেতারা
বাংলাদেশের পুরানো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে দলে ভাঙন ধরে। বর্তমানে একই নামে দুটি দল রয়েছে। দলগুলো হলো- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (কাসেমী), ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা জিয়া উদ্দীন। গত ১৪ জুলাই রায়পুরীর নেতৃত্বাধীন অংশটি ২০ দলীয় জোট ছেড়ে যায়। অপর অংশটি এখনও জোটে আছে।
দলের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে জমিয়তের (কাসেমী) সহ-সভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসূফী বলেন, ‘সিলেট-ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশকিছু জেলায় দলের শক্তিশালী সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে। ২০১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে কয়েকজন নারী সদস্য রয়েছেন।
কতজন নারী সদস্য আছেন— তা জানাতে পারেননি আবদুর রব।
জমিয়তের অপর (রায়পুরী) অংশের নেতারা জানান, সংগঠনের কোনোপর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ নেই। তবে কর্মী ও সমর্থক হিসেবে কিছু নারী কাজ করেন।
ইসলামী ঐক্যজোটের ১৮১ জনের কমিটিতে নারী একজন
১৯৯০ সালে ছয়টি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল মিলে গঠিত হয় ইসলামী ঐক্যজোট। পরে মুফতি আমিনীর দলসহ আরও কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল এ জোটে যোগ দেয়। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে জোটগতভাবে দলগুলো সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। ১৯৯৯ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটে যোগ দেয় ইসলামী ঐক্যজোট। এরপর কয়েক দফায় ভাঙনে জোট থেকে অনেকগুলো দল বেরিয়ে যায়। বর্তমানে ইসলামী ঐক্যজোট নামে তিনটি রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর মধ্যে মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল। বাকি দল দুটি হলো- মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট এবং অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিবের নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট। তারা দল দুটির চেয়ারম্যান।
বর্তমানে ইসলামী ঐক্যজোট নামে তিনটি রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর মধ্যে মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল। বাকি দল দুটি হলো- মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট এবং অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিবের নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট
নিবন্ধিত দল ইসলামী ঐক্যজোটের ভারপ্রাপ্ত প্রচার সম্পাদক আনছারুল হক ইমরান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের ২৪টি জেলায় দলের সক্রিয় সংগঠন রয়েছে। তিন বছর মেয়াদের ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ এক বছর আগে শেষ হলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সম্মেলন করা যায়নি।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৮ সালে। এরপর আর সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। ১৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ছাড়া আর কোনো নারীনেত্রী নেই।
আব্দুর রকিবের ইসলামী ঐক্যজোট বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক। জোটের কর্মসূচির ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে এ অংশের রাজনৈতিক কার্যক্রম। দীর্ঘদিন জোটের কোনো কার্যক্রম না থাকায় বর্তমানে দলটিও নিষ্ক্রিয়। এদিকে, দলের চেয়ারম্যান আব্দুর রকিব রাজনীতির চেয়ে বেশি ব্যস্ত আইন পেশা নিয়ে।
জানতে চাইলে আব্দুর রকিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘করোনার কারণে কোনো দলেরই কার্যক্রম নেই। একই অবস্থা আমাদেরও।’ সর্বশেষ ২০২১ সালের ৫ মার্চ দলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে— উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ৬১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি আছে। তবে, সেখানে কতজন নারী সদস্য আছেন, সঠিক তা জানা নেই।’
দেশের কতটি জেলায় দলের কার্যক্রম রয়েছে— জানতে চাইলে আব্দুর রকিব বলেন, এ মুহূর্তে তার সঠিক তথ্য আমার কাছে নেই। তবে, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জসহ বেশকিছু জেলায় সংগঠনের কার্যক্রম রয়েছে।
বর্তমানে ‘ইসলামী ফ্রন্ট’ নামের দুটি রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব রয়েছে। দল দুটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত। একটি হলো- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ। অপরটি হলো- বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, চেয়ারম্যান এম এ মান্নান
মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট আওয়ামীপন্থী দল হিসেবে পরিচিত। দলটির চেয়ারম্যান নিজেও দাবি করেন, তারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন মহাজোটের শরিক দল। সারাদেশে তাদের ২০টির মতো জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে।
দলের সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সর্বশেষ ২০২০ সালের এপ্রিলে তাদের সম্মেলন হয়েছে। দলের ৫৭ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে নারীনেত্রী রয়েছেন চারজন। আগামীতে মহাজোটের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চিন্তাও আছে আমাদের।
ইসলামী ফ্রন্টে একজন নারী সদস্য
১৯৮০ সালের ২১ জানুয়ারি ‘ইসলামী ছাত্রসেনা’ নামের একটি ছাত্র সংগঠন গঠিত হয়। ১৯৯০ সালে তা ‘বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট’ নামের রাজনৈতিক দলে আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৩ সালে দলের সহ-সভাপতি সৈয়দ বাহাদুর শাহসহ ছয়জনকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত নেতারাই পরে একই নামে আরেকটি দল গঠন করেন।
বর্তমানে ‘ইসলামী ফ্রন্ট’ নামের দুটি রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব রয়েছে। দল দুটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত। একটি হলো- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ। অপরটি হলো- বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, চেয়ারম্যান এম এ মান্নান।
দল দুটির সাংগঠনিক অবস্থা বেশ বেহাল। নিয়মিত সম্মেলনও হয় না। ধর্মভিত্তিক দল দুটিতে নারী নেতৃত্বও উপেক্ষিত। জানা গেছে, তাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে মাত্র একজন করে নারী সদস্য রয়েছেন।
নিজ দলের কেন্দ্রীয় কমিটি কত সদস্যবিশিষ্ট— নিজেই জানেন না ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ। কেন্দ্রীয় কমিটি কত সদস্যবিশিষ্ট— জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘১১১ অথবা ১০১ সদস্য হবে মনে হয়।’
কত বছর আগে দলের সম্মেলন হয়েছে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই বছর আগে হয়েছে। এখন তো করোনার কারণে সম্মেলন করা সম্ভব হচ্ছে না। দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে একজন নারী সদস্য রয়েছেন বলেও জানান বাহাদুর শাহ।
একই নামের অপর অংশের মহাসচিব জানান, দলের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০১৫ সালে। কমিটির মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হলেও সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। কমিটির মধ্যে মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে এক নারী সদস্য রয়েছেন। নারীদের জন্য ‘বাংলাদেশ ইসলামী মহিলা ফ্রন্ট’ নামের একটি সহযোগী সংগঠনও রয়েছে বলে জানান তিনি।
এএইচআর/এমএআর/