আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

‘আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলেই বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে’- এমনটাই অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে ব্রিফিংকালে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

বিএনপির শাসনামলে স্থিতিশীল সামস্টিক অর্থনীতির সফল বাস্তবায়ন হয়েছে বলে দলটির নেতাদের দাবির প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আদৌ সত্য নয়, তাদের এ দাবি অন্যান্য বক্তব্যের মতই অসত্য ও অন্তঃসারশূন্য। বিএনপির শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ছিল চরম স্থবিরতা। বাজেট ছিল পরনির্ভর, ছিলো না বাস্তবায়নে কোনো সক্ষমতা।

তিনি বলেন, বিএনপির উন্নয়ন নীতি ও কৌশল ছিল ভ্রান্ত এবং গণবিরোধী। উৎপাদন ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে বিএনপি ধ্বংস করে দিয়েছিল। দৈনিক ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিলো। শুধুমাত্র বিদ্যুৎ খাত নিয়ে তুলনা করলেই বিএনপির দাম্ভিকতা চূর্ণ হতে বাধ্য।

বিএনপি নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি তাদের সময়ে সারের জন্য কৃষকদের প্রাণ দিতে হয়েছিল। এসব কি স্থিতিশীলতার নজির? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব অর্থনীতির বিস্ময়।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নবান্ধব নীতি ও কৌশলের কারণে ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২২৭ ডলার।

আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ক্রমাগত রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, ঈর্ষনীয় প্রবাসী আয়, রফতানি আয়, কর্মসংস্থান, দরিদ্র ও অতিদারিদ্র হ্রাস, দেশ-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ প্রতিটি সূচকে যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা সামস্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও টেকসই উন্নয়নের পথকে মসৃণ করেছে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সূচক এবং মানব উন্নয়ন সূচকেও বাংলাদেশ দিন দিন উন্নতি করছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অন্ধকার গহ্বর থেকে সমৃদ্ধির সোপানে উন্নীত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল অর্থনীতির মর্যাদায় অভিষিক্ত। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সমৃদ্ধ দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ইলিশ উৎপাদনে প্রথম ও আউট সোর্সিংয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে, অন্যদিকে তৈরি পোশাক রফতানিতে দ্বিতীয়, প্রবাসী আয়ে ৮ম, ধান উৎপাদনে ৪র্থ, পাট রফতানিতে প্রথম এবং উৎপাদনে দ্বিতীয়, মিঠাপানির মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি দেশকে পরনির্ভরশীল ও নতজানু দেখতে চায়। চায় তাবেদার হয়ে থাকতে। আওয়ামী লীগ দেশকে একটি মর্যাদাশীল এবং সমৃদ্ধ অবস্থানে উন্নীত করতে চায়। বিএনপি নেতারা দুর্নীতির কথা বলেন, অথচ তাদের শাসনামলে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির সময়কাল ছিল।

কাদের বলেন, বিএনপির সময়কাল ছিল দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য। যে কারণে পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। আজ বিএনপি নেতারা মুখরোচক কতো কথাই বলেন। অথচ তাদের সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তারেক রহমানের পাচার করা টাকা আটক করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস।

তিনি বলেন, আজ বিএনপি নেতারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন! দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকার তার কঠোর অবস্থান ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন। বিএনপির শাসনামলে দুর্নীতির অভিযোগে দলীয় কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নজির ফখরুল সাহেবরা দেখাতে পারবেন কি?

এইউএ/এমএইচএস