প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘মানসিকভাবে আপনার ওপর এত চাপ, এত অত্যাচার! আপনার বিশ্রাম প্রয়োজন। আপনার চিকিৎসা প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমানকে টানাটানি না করে তাদের শান্তিতে ঘুমাতে দেন।’

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলন ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা আয়োজিত গণসংহতি আন্দোলনের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সমাবেশে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলছেন চন্দ্রিমা উদ্যানে নাকি জিয়াউর রহমানের লাশ নেই। উনি জানবেন কী করে এ বিষয়ে? যারা জিয়াউর রহমানের লাশ রিসিভ করেছিল। সেই পুলিশ মিলিটারিরা এখনো বেঁচে আছে। যিনি ময়নাতদন্ত করেছিলেন সেই ডা. তোফায়েল এখনো বেঁচে আছেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে তার (জিয়ার) লাশ আনার পর দেশের সবচেয়ে বড় জনসমাগম হয়েছিল।

জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। কারণ হঠাৎ তার জ্ঞান চক্ষু খুলে গেছে। তিনি সাহসের সঙ্গে, সততার সঙ্গে আজকে নিজের দলের দিকে তাকাতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রান্ত হলে তিনি তার দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফোন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আপনি তো বললেন না, তিনি জিয়াউর রহমানকে কেন ফোন করলেন না, তিনি জেনারেল ওসমানীকে কেন ফোন করেননি? খালেদ মোশাররফকে কেন ফোন করেননি? সবচেয়ে বড় কথা যারা তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্বাধীনতা এনেছিল তিনি তাদের কেন ফোন করেননি?  তিনি কি বিব্রতবোধ করছিলেন? স্বাধীনতার পরে সাড়ে তিন বছরেও তিনি মুজিবনগর পরিদর্শন করেননি। তাই জীবনের শেষ মুহূর্তে তার মনে একটা অনুকম্পা হচ্ছিল।’

সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাক তিন দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আগামী তিনটি নির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হতে হবে। সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ বাতিল, আদালত নিরপেক্ষ করতে সরকারবিরোধী দল ও সুপ্রিমকোর্টের প্রতিনিধিদের নিয়ে সাংবিধানিক কমিটি গঠন, নির্বাচন কমিশনসহ সবগুলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ নিয়োগ বন্ধে সাংবিধানিক কমিশন গঠন করা ও সমস্ত ঔপনিবেশিক আইন-কানুন বাতিল করা।

মনির উদ্দীন পাপ্পুর সভাপতিত্বে ও সংগঠনটির ঢাকা মহানগরের সদস্য প্রবীর সাহার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।

এইচআর/এসকেডি