আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক / ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে কী কারণে মাতম করেন? কাঠের বাক্সের মধ্যে জিয়াউর রহমানের লাশ ছিল সেটা প্রমাণ করেন? চট্টগ্রাম থেকে যে কাঠের বাক্সটি এসেছিল সেই বাক্স খুলে তার স্ত্রী খালেদা জিয়াকেও খুলে দেখানো হয়নি।’

শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ১৫ আগস্টকে খুঁজতে গেলে আমাদের একাত্তরকে খুঁজতে হবে। সেদিন স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল কারা? সেদিন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে মুখ থুবড়ে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিল কারা? কারা সেদিন পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দাদের প্রতিযোগী হিসেবে ভেতরে ঢুকে মুক্তিযুদ্ধকে বিপদগ্রস্ত করতে চেয়েছিল, সেই সামরিক অফিসার কারা? সেদিন বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ফেডারেশন করতে চেয়েছিল জিয়া-মোশতাকরা।

তিনি বলেন, আগস্ট মাস এলে মির্জা ফখরুলদের বুকে থরথরে কাঁপন আসে। থরথর করে কাঁপেন তারা। এ আগস্ট মাস শোকাবহ মাস। এ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে নির্বাচিত সাংবিধানিক সরকারকে উৎখাত করে আপনাদের জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছিল। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল তাদের নিরাপদে বিশেষ বিমানযোগে গার্লফ্রেন্ডসহ কারা বিদেশে পাঠিয়ে ছিল? সেই জিয়াউর রহমান। মির্জা ফখরুল সাহেব, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে ফাস্ট সেক্রেটারি, সেকেন্ড সেক্রেটারি হিসাবে পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান।

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আরও বলেন, ‘২১ আগস্ট খালেদা জিয়াকে যেতে দেওয়া হয় নাই বলে মন্তব্য করেন। সবকিছু উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছে। গতকাল একটি আলোচনা সভায় কী বলেছেন? একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল? বাংলাদেশে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল এই খালেদা জিয়া ও তার কুলাঙ্গার পুত্র তারেক রহমান আর মতিউর রহমান-নিজামীরা। এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর / ফাইল ছবি

তিনি বলেন, ২১ আগস্টে ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ব্যবহার করে। পাকিস্তানের ফ্যাক্টরিতে এটা তৈরি হয়। সেই গ্রেনেড কীভাবে বাংলাদেশে আসল?  হত্যাকাণ্ড ঘটালেন, সারাদিন কোনো পুলিশ ছিল না। তারপর আমরা যখন উদ্ধার করতে গেলাম তখন আমাদের ওপর পুলিশ অতর্কিত টিয়ারগ্যাস-লাঠিচার্জ করে হামলা করলো কেন? কেন সেদিন লাশ গুম করতে চেয়েছিলেন? কিন্তু জনতার বাধায় আপনারা সেদিন লাশ গুম করতে পারেননি।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে মাতম করেন, কী কারণে করেন? এ লাশ কার ছিল? ওই কাঠের বাক্সের মধ্যে জিয়াউর রহমানের লাশ ছিল প্রমাণ করেন? চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কোনো লাশ আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অতীতের বিভিন্ন ভূমিকার প্রশংসা করে নানক বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা বাহিনীর দায়িত্ব পালন করেছে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ। এ ছাত্রলীগ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরে আনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এক/এগারোর সময় বঙ্গবন্ধুকন্যাকে গ্রেফতারের পর প্রথম প্রতিবাদ করেছিল ছাত্রলীগ। স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। 

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বক্তব্য দেন।  

এইউএ/এমএআর/