বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আসল জন্মদিন জাতির সামনে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির জন্য শোকের দিন। এদিন খুনিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৮ জন মানুষকে হত্যা করেছিল। ১৯৯৬ সাল থেকে খালেদা জিয়া এই শোকের দিনে আইএসআইয়ের পরামর্শে জন্মদিন পালন শুরু করেন। তবে কোনো কাগজপত্রে তার জন্মদিন ১৫ আগস্ট নেই। জাতির শোকের দিনে মিথ্যাচার ছেড়ে আসল জন্মদিন জাতির সামনে প্রকাশের দাবি জানাই।

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, খালেদা জিয়ার এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিয়ের কাবিননামায় জন্মদিন উল্লেখ করা হয় ৯ আগস্ট, ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ৫ আগস্ট, খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সাল থেকে জাতীয় শোক দিবসে (১৫ আগস্ট) আনন্দ-উৎসব করে জন্মদিন উদযাপন করে আসছেন। করোনা টেস্টের যে রিপোর্ট ফেসবুকে ছড়িয়েছে তাতে তার জন্মদিন উল্লেখ রয়েছে ৮ মে ১৯৪৬ সাল। আসল জন্মদিন কোনটা? যে জন্মদিনের সঠিক তথ্য দিতে পারে না, জাতির শোকের দিনে আনন্দ উল্লাস করে বিকৃত ও বিভ্রান্তির রাজনীতি করে তাদের জনগণ বয়কট করেছে, করবে।

তিনি বলেন, আমরা শুনছি তারা এবারও জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। তাকে অন্তত জাতির শোক নিয়ে বিকৃত তামাশা বন্ধের আহ্বান জানাই।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। কয়েকজন পালিয়ে আছে। তাদের দেশে এনে রায়ও কার্যকর হবে। তবে সেদিনের হত্যাকারীদের যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, পুনর্বাসন করেছে তাদেরও বিচার করতে হবে। আমরা চাই চিরদিনের জন্য ষড়যন্ত্র বন্ধ হোক।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, হত্যাকারীরা শুধু জাতির পিতাকে হত্যা করেনি, তারা হাজার বছরের স্বপ্ন আশা আকাঙ্ক্ষাকে হত্যা করেছিল। দেশকে পাকিস্তানের আদলে বানানোর জন্য মিলিত হয়েছিল। যারা বাংলাদেশে মেনে নেয়নি, আইএসআইয়ের এজেন্ট, তাদের যতদিন আমরা নির্মূল করতে না পারব ততদিন তারা হুমকি হিসেবে রয়ে যাবে। একাত্তরের পরাজিত শক্তির উত্তরসূরি বিএনপি-জামায়াত। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপকৌশল নিচ্ছে।

তিনি বলেন, যারা বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিদদের মধ্যে বিভক্তি টানতে চায় তাদের ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। এরা পদলেহী, সুযোগসন্ধানী। জাতির পিতার আদর্শ এদের মধ্যে নেই। মোশতাক জাতির পিতার পাশে থেকেই জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ থাকুন। এদের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি, দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি থেকেও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। যেকোনো অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াব। ছয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যবদ্ধ থাকলে বঙ্গবন্ধু কন্যার পাশে কৃষিবিদরা শুভশক্তি হিসাবে থাকতে পারবো।

বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শহীদুর রশিদ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইদুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ, কৃষকলীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন প্রমুখ।

এইউএ/এসকেডি