প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি, জনবল নিয়োগ ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবে এবং দলীয়করণের ফলে গণটিকাদান এখন গণহয়রানিতে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এ অবস্থায় হয়রানিমুক্তভাবে টিকাদানের দাবি করেছেন জোটের নেতারা।  

রোববার (৮ আগস্ট) বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের ভার্চুয়াল সভায় নেতারা অভিযোগ জানিয়ে এ দাবি করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ। 

সভায় যুক্ত ছিলেন, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা শিশু, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক কমরেড মনিরুদ্দিন পাপ্পু, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজকুজ্জামান রতন, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড আব্দুল্লাহ আল কাফী রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আকবর খান, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কমরেড শহীদুল ইসলাম সবুজ, ইউসিএলবি’র সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক কমরেড বাচ্চু ভুইয়া প্রমুখ।

জোটের নেতারা বলেন, কোনো দেশের পক্ষে একা করোনা মোকাবিলা সম্ভব না। বিষয়টি গত দেড় বছরে গোটা বিশ্ব বুঝলেও বাংলাদেশের সরকার বুঝেনি। বাম জোট ২০২০ সালের এপ্রিল থেকেই সর্বদলীয় সভা করে করোনাকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করে মোকাবিলায় সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছিল, কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি।

তারা বলেন, শুরুতেই সরকার শুধুমাত্র ভারতের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় টিকা নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। চীনকে সিনোভ্যাকের তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু এখন সিনোভ্যাক থেকেই সাত কোটি ডোজ টিকা কেনার কথা বলা হচ্ছে। যদি সে সময় সিনোভ্যাকের ট্রায়াল হতো এবং যৌথভাবে উৎপাদনে যাওয়া যেত, তাহলে এতদিনে প্রায় সবার টিকা নিশ্চিত করা যেতো। এখন আবার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম দেখা যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি, জনবল নিয়োগ ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবে এবং দলীয়করণের ফলে গণটিকাদান এখন গণহয়রানিতে পরিণত হয়েছে।

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে দৈনিক কমপক্ষে দুই লাখ করোনা পরীক্ষা, গ্রাম-ইউনিয়ন পর্যায়ে নমুনা সংগ্রহ, উপজেলা পর্যায়ে করোনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরি ও ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করে বিনামূল্যে পরীক্ষা ও চিকিৎসা, প্রাপ্তবয়স্ক সব নাগরিককে জটিলতা ও হয়রানিমুক্তভাবে দ্রুত টিকা দেওয়া, কর্মহীন-শ্রমজীবী মানুষকে খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তা এবং গ্রাম-শহরে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানানো হয় সভায়। এসব দাবিতে আগামী ১৮ আগস্ট সারাদেশে সমাবেশ ও বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে সেদিন বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল হবে।

এমএইচএন/আরএইচ