গণটিকা অভিযান গণসংক্রমণ অভিযানে পরিণত হয়েছে : মির্জা ফখরুল
সরকার পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহ না করেই গণটিকার নামে গণপ্রতারণা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, একইসঙ্গে চরম অব্যবস্থাপনা এবং দলীয়করণের কারণে এই লোক দেখানো গণটিকা অভিযান গণসংক্রমণ অভিযানে পরিণত হয়েছে।
রোববার (৮ আগস্ট) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিজ্ঞাপন
মির্জা ফখরুল বলেন, সারাদেশে এই গণটিকার নামে একটা গণতামাশা শুরু করেছে সরকার। সরকারের হাতে টিকা এসেছে ১ কোটি ৬০ লাখ। অথচ শতকরা ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে হলে প্রয়োজন ২৬ কোটি ডোজ। সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপেই প্রমাণিত হয়েছে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।
টিকা নিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ সরকার জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, অন্যদিকে গণটিকা দেওয়ার কর্মসূচি সম্পূর্ণ দলীয় কর্মসূচিতে পরিণত করার উদ্দেশে দলীয় কর্মীদের সম্পৃক্ত করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। স্থানীয় সমাজকর্মী, শিক্ষক, সামাজিক সংগঠন, জনপ্রতিনিধি ও এনজিওদের সম্পৃক্ত করলে এই ধরনের দলীয়করণের সম্ভাবনা কম থাকত বলেও মনে করেন মির্জা ফখরুল।
সরকার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় বৈষম্য সৃষ্টির একটা অবৈধ সুযোগ সৃষ্টি করেছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, সব ধরেনর দলীয়করণের প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে এসে সার্বজনীন টিকা দেওয়ার কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আহ্বান জানাই।
ন্যূনতম সময়ে টিকা দেওয়ার জন্য দেশে টিকা উৎপাদনকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তবে তা অবশ্যই হতে হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের প্রায় ৫০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। অবিলম্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য হ্রাসে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
পত্রিকায় প্রকাশিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গত দুই অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ কম অর্জন হয়েছে। সরকার রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার কারণে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে বাস্তবতা বিবর্জিত উচ্চাভিলাসী পরিসংখ্যান দিয়েছে। ব্যর্থ হয়েছে সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।
অবিলম্বে দেশের বরেণ্য অর্থনীতিবিদের মতামত নিয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখার বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের মিড়িয়া উইংয়ের সদস্য সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।
এএইচআর/জেডএস