মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠনসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনার সময়ে যে ক্ষতিটা হয়েছে তা মারাত্মক। আজ শিক্ষাক্ষেত্রে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো আমাদের অর্থনীতি, রাজনীতি ও ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করছে। এজন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠন করা দরকার। একইসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির উদ্যোগে ‘কোভিড-১৯ বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা-সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় মহাসংকটে জাতির ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এ ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষাবিদ, অভিভাবক, শিক্ষার্থী‑ সবাইকে নিয়ে একটি জাতীয় কমিশন অবিলম্বে গঠন করা প্রয়োজন এবং অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিকল্পনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া প্রয়োজন। শিফট করে, বিভিন্ন রকম কারিকুলাম প্রণয়ন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে।

নির্বাচিত সরকার নয় বলেই আজ জনগণের প্রতি এত অনীহা বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে কি, কথাটা হালকা শোনাবে- এটা একটা ফ্রড সরকার। জনগণকে প্রতারিত করা ছাড়া তাদের আর কোনো কাজ নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা প্রতারণা করছে। জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য, মূল জায়গা থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সবকিছু করছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আন্তরিকতার অভাবের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের এখানে দুরভিসন্ধি রয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। এ ক্ষতি নিয়েই আগামী ২০ বছর আমাদের এগোতে হবে।

বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে অবিলম্বে শ্রেণি শিক্ষা চালুর দাবি করেন সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, শ্রেণির শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আইপি বা অনলাইনের মাধ্যমে যে পাঠদান করার চেষ্টা করা হচ্ছে, আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে এটার ফলাফল ভালো নয়। অতিদ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত। যেখানে সবকিছু খোলা, কলকারখানা খোলা, দোকান-পাট খোলা, সেখানে আর কোনো যুক্তি নেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার।

ডাবল শিফট করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণি শিক্ষা চালু, উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে অনলাইন ও সরাসরি শ্রেণি শিক্ষার সমন্বয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষার্থীদের অতি দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা, ড্রপ আউট দূর করতে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত প্রণোদনা ঘোষণা, যোগ্য, উপযুক্ত ও মেধাবী প্রজন্ম তৈরি করার জন্য যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন এবং শিক্ষাখাতে দক্ষতা বাড়ানোসহ ছয় দফা প্রস্তাবও তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক খন্দকার মোশাররফ।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় চার ঘণ্টার অধিক সময়ের এই ভার্চুয়াল আলোচনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ।

এএইচআর/এসএসএইচ