সরকারের প্রচণ্ড চাপে ২০ দলীয় জোট থেকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের একাংশ চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (১৮ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, রাজনীতিতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের একাংশ টিকতে পারছে না। বিরোধী রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারছে না সে কারণে তারা চলে গেছে। এই কথা বললেই তো হয়, প্রচণ্ড চাপে আমরা টিকতে পারছি না, মামলা-মোকদ্দমায় ভীষণভাবে ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছি। সেটা না বলে কোনো ব্যক্তি বা দলকে দোষারোপ করা সঠিক কাজ নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমরা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঘোষণাপত্র অনুযায়ী রাজনীতি করছি। ২০ দলে যারা আছেন আমাদের সঙ্গে তারাও সেভাবে রাজনীতি করছেন এবং পারস্পরিক আস্থা আমাদের মধ্যে চমৎকার আছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে ২০ দল ছাড়ার ঘোষণা দেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া। এ অংশটি প্রয়াত আল্লামা নুর হোসেইন কাশেমীর অনুসারী।

ওই দিন বাহাউদ্দীন জাকারিয়া বলেছিলেন, বিএনপি মহাসচিবের শরীয়া আইনে বিশ্বাসী না হওয়ার বক্তব্য দেওয়া, দেশব্যাপী আলেম-উলামাদের জেলজুলুমের প্রতিবাদ না করা, দলের প্রয়াত নেতা আল্লামা নুর হোসাইন কাশেমীর ইন্তেকালের পর তার প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে সমবেদনা জ্ঞাপন না করা এবং তার জানাজায় অংশগ্রহণ না করায় জমিয়তের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা মনে করি ২০ দলীয় জোট থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করাই জমিয়তের জন্য কল্যাণকর।

এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শরীয়া আইনের ব্যাপারে তারা বলেছেন যে, আমরা শরীয়া আইনে বিশ্বাস করি না। আমাদের সংগঠনের গঠনতন্ত্র পড়লে দেখবেন, শরীয়া আইনের বিশ্বাসের ব্যাপারটা নেই কোথাও। আমাদের সব জায়গায় পরিষ্কার করে বলা আছে যে, আমরা শরীয়া আইনের কোনো বিরোধিতা করব না। শরীয়া আইনের বিরোধী কোনো আইন পাস করব না। আমরা সরকারে ছিলাম কোনো আইন পাস করিনি। কিন্তু এই কথা বলা যায় কী যে, আমি শরীয়া আইনের বিরোধিতা করেছি, ইসলামী মূল্যবোধের বিরোধিতা করেছি। এসব কথা বলার অর্থ হচ্ছে যে, ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা। যেটা আমি মনে করি যে, তারা ভালো কাজ করেনি। এসব ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে তারা দূরে সরে আসবেন।

তিনি বলেন, নুর হোসেইন কাশেমীর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে শোকবার্তা প্রদান ও ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে আলেম-উলামাদের গ্রেফতার ও মামলা দায়ের ঘটনায় বিবৃতি প্রদান ও বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে এর প্রতিবাদ করে বিএনপি। 

এএইচআর/এসকেডি