মাত্র ২.৫ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছে, দাবি মোশাররফের
বিশ্বের যেসব দেশ করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, তারা প্রায় ৭০/৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা প্রদান করেছে। অথচ বাংলাদেশে সরকার টিকা কূটনীতিতে চরম ব্যর্থ। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সোমবার (৫ জুলাই) দুপুরে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য বলেন। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরতে গিয়ে সকালে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে বিএনপি।
বিজ্ঞাপন
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘টিকাদান শুরুর পর থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন মাত্র ৪২ লাখ ৮১ হাজার ৭৭৬ জন। সেই হিসাবে গত ৬ মাসে মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তাতেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া অগ্রাধিকার তালিকা অনুসরণ করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করেছিল। যার সম্পূর্ণ মূল্য অগ্রিম দিয়েছিল। কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউট ২ দফায় ৭০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহের পর বন্ধ করে দেয়। এতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ১৪ লাখ ৪০ হাজার মানুষ।
ফাইজার ও সিনোফার্মের টিকার প্রসঙ্গে সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সিনোফার্মের ২০ লাখ ও মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ টিকাসহ এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে দেশে টিকা এসেছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ডোজের বেশি। বর্তমানে দেশে মাত্র ৫৯ লাখ ডোজের বেশি টিকা মজুদ আছে। ভবিষ্যতে টিকা সংগ্রহের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ১৮ কোটি মানুষের দেশে উল্লেখিত সংখ্যক টিকা কত অপ্রতুল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
যত টিকা লাগে কেনা হবে সংসদে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্যের প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ বলেন, কিন্তু কোথায় থেকে ক্রয় করা হবে, কবে নাগাদ ক্রয় করা হবে? তার কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য তিনি রাখেন নাই।
করোনা পরিস্থিতিতে দেশের জনগণকে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, নিজে সুরক্ষিত থাকুন, অন্যদেরকেও সুরক্ষিত করতে সহযোগিতা করুন।
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, গতকালও ডব্লিউএইচও ডিজি বলেছেন ন্যূনতম শতকরা ৭০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে হবে। তাহলেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করা, অর্থনীতিকে সচল রাখা সম্ভব। সাড়ে ১২ কোটি মানুষকে যদি টিকা দিতে হয়, তাহলে ন্যূনতম ২৫ কোটি ডোজ দরকার। হাতে আছে মাত্র দেড় কোটি বা এক কোটি ৬০ লাখ। প্রতিদিন দুই বা চার লাখ মানুষকেও টিকা দিলেও এক কোটি মানুষকে দিতে ২৫ দিন লাগবে। যদি টিকা হাতে থাকে তো! এই বিষয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, মহাসচিব অধ্যাপক আবদুস সালাম।
এএইচআর/এমএইচএস