কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নাগরিক সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদ নেতা ফারুক হাসানের ওপর হামলা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি জামিনের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। 

সোমবার (৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সদ্য গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান আনিছুর রহমান এ উদ্বেগ জানান।

এতে বলা হয়েছে, হামলাকারী মোহাম্মদ আবীর আহমেদ শরীফ ও কোরবান শেখ হিল্লোলের দ্রুত জামিন হওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা দাবি জানাই দ্রুত তাদের জামিন বাতিল করে অপর চার আসামি সাইফুল ইসলাম, ফয়েজ, রোহান ও তনয়কে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হামলার পর ফোন করে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে তাদের মারধরের জন্য ফেসবুকে প্রচারণা চলানো হচ্ছে। তাই সরকারকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

আনিছুর রহমান আরও বলেন, চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে জড়িত ছাত্র-জনতার প্রথম রাজনৈতিক দল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের অভিষেক উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে অতিথি হিসেবে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য ও দুই শতাধিক আহত ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও নানা শ্রেণি পেশার নাগরিকরা অংশ নেন। নাগরিক সমাবেশে অংশ নেওয়া গণঅধিকার পরিষদের নেতা ফারুক হাসান বেশ কয়েকবার জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান মো. শফিউর রহমানকে অনুরোধ করেন তাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতে। এরপর তিনি বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বিপ্লবী সরকার গঠন করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমান সংবিধান ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আমরা জুলাই-আগস্টে বিপ্লব করেছি। আর আজ এই সংবিধানের দোহাই দিয়ে আমাদেরকে হাইকোর্ট দেখানো হয়।’

সমাবেশে তিনি শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনে সরকারের তরফ থেকে অবহেলার সমালোচনা করেন। এরপর, ফারুকের বক্তব্যকে সরকার বিরোধী বক্তব্য দাবি করে সর্বপ্রথম সাইফুল ইসলাম নামে এক হামলাকারী চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন। তখন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নেতাকর্মীরা ফারুক হাসানকে উদ্ধার করে মঞ্চে শহীদ পরিবারের সঙ্গে বসার ব্যবস্থা করেন। এর আধাঘণ্টা পর ফারুক হাসান তার কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে বিদায় নেন। তিনি সমাবেশ থেকে বের হওয়ার পরপর সাইফুল, শরীফ, হিল্লোল, রোহান, ফয়েজ ও তনয়ের নেতৃত্বে ফারুকের ওপর হামলা হয়। ওই সময় হামলা থেকে ফারুক হাসানকে রক্ষা করতে গিয়ে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম ও এস.এম রাফসান যানি, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম সাকিব, সলিমউল্লাহ ও হিযবুল্লাহ আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রাফসানযানির একটি দাঁত ভেঙে গেছে ও সাইয়েদ কুতুবের পিঠ কেটে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনার পর আয়োজক হিসেবে আক্রান্ত হওয়ার পরেও জাতীয় বিপ্লবী পরিষদকে নিয়ে বিভিন্ন মহল বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ হামলার ভিডিও দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এক্ষেত্রে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী ইহসান ভিডিও দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের  পরিচয় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে জানিয়েছেন। এমনকি হামলার নেপথ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা সারজিস আলমের সম্পৃক্ততার প্রমাণ হিসেবে নাগরিক সমাবেশে না আসতে শহীদ পরিবারের সদস্যদেরকে পাঠানো তার ভয়েস রেকর্ড তথ্য উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

আরএইচটি /এআইএস