চট্টগ্রামে ফটিকছড়ি উপজেলার জাফতনগর ইউনিয়নের বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে মো. নুর উদ্দিন খানকে সভাপতি ও মো. আনোয়ার হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। 

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল আজিম উল্লাহ বাহার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেইজে বিএনপির বিভিন্ন ইউনিয়নের নবগঠিত কমিটির নাম উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। যেখানে জাফতনগর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আনোয়ার হোসেনের নাম দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতাকর্মীরা।

ফটিকছড়ি বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, আনোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগের লোক ছিলেন। তিনি ফটিকছড়ি থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা খাদিজাতুল আনোয়ার সনির পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়বের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। আওয়ামী লীগের নানা কর্মসূচিতে অংশ নিতেন তিনি।

এদিকে, ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে হঠাৎ বিএনপির লোক বনে যান আনোয়ার। সবশেষ কমিটিতে তার নাম দেখে তাজ্জব বনে যান বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলেন, মাঠে লড়াই সংগ্রাম করি আমরা। হঠাৎ কেউ এসে সাধারণ সম্পাদক পদ পেলে তা মেনে নেওয়া যায় না। ৫ আগস্টের পরে জন্ম নেওয়া কোনো নেতা ফটিকছড়িতে রাজনীতি করতে পারবে না। যিনি আওয়ামী লীগে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানকে জয়ী করতে মাঠে ও ময়দানে কাজ ও নৌকার জন্য ভোট ডাকাতি করতে পারেন, তিনি কীভাবে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হন? কীভাবে এমন পদ পান?

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার আলমগীর বলেন, দীর্ঘ পৌনে ১৬ বছর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের নেতাকর্মীরা রাজনীতি করেছেন। সেখানে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ক্ষতি সাধন করা ব্যক্তিকে যদি সাধারণ সম্পাদক করা হয়, তাহলে বিষয়টি উচিত হয়নি। সাধারণ সম্পাদক করার জন্য কী বিএনপির লোকের অভাব হয়েছে?

ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার বলেন, আনোয়ার হোসেন আমাদের লোক। জাফতনগর বাজার কমিটি যেটা আছে সেখানে উনি টানা ৯ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এখনো তিনি বাজার কমিটিতে আছেন। বাজার কমিটিতে থাকার সুবাদে নির্বাচনী প্রচারণায় আসা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে উনার দেখা-সাক্ষাতের বিষয়টি স্বাভাবিক। উনি ইচ্ছে করলে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের কোনো পদে যেতে পারতেন, তা করেননি। উনি বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। আমরা যোগ্য প্রার্থীকেই কমিটিতে স্থান দিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি বাজার কমিটিতে দীর্ঘদিন ধরে পদে রয়েছি। বাজার উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার কাছে আমি গিয়েছি। এ ছাড়া আমি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সামাজিকভাবে আমার একটা অবস্থান রয়েছে। এ কারণে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে ছবি রয়েছে। তবে আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত নই।

গত ১৮ ডিসেম্বর জাফতনগর ইউনিয়নে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। একই দিন সভাপতি হিসেবে মো. নুর উদ্দিন খান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মো. আনোয়ার হোসেনের নাম ঘোষণা করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার।

এদিন শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনা দেন আজিম উল্লাহ বাহার।

এমআর/এমজে