বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রাজনৈতিক দল গড়ে উঠে গণ স্বার্থকে কেন্দ্র করে। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের পর গঠিত সরকার দেশের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছেন। আমরা সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। আবার অনেক কাজের সমালোচনাও করছি। সমালোচনা মানে এই নয় যে আমরা সরকারের বিরোধিতা করছি, পতন দাবি করছি।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল মহানগর উত্তরের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, একজন উপদেষ্টা বলেছেন ৫০ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো কিছুই করতে পারেনি, আমরা করছি। তাহলে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এবং ২৪-এর সফলতা কে এনেছে? এগুলো কী সুশীল সমাজের অবদান? হ্যাঁ তারা সমর্থন করেছে। তিনশ শতাব্দী থেকে ভোটের প্রথা চালু হয়েছে। আটশ বছর আগে ইংল্যান্ডে অধিকারের আন্দোলন শুরু হয়েছে। বড় বড় উন্নত দেশেও রাষ্ট্রের সংস্কার কখনো রাজনীতিবিদদের অবসর দিয়ে হয় না।

তিনি আরও বলেন, এটি অহমবোধের অভিব্যক্তি। একটি রাষ্ট্রকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যাওয়ার যে সংস্কার এই সংস্কারতো মনিষীরা চিন্তা করেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোই সেটা বাস্তবায়ন করেছে। প্রকৃত সংস্কার করলে গণতন্ত্রের যে অপরিহার্য অংশ নির্বাচন, আইনের শাসন, বিচার বিভাগ এগুলোর সংস্কার তো বিলম্ব হওয়ার কথা না।

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, অগ্রগতি যে একেবারে হয়নি আমরা তা বলছি না। আমরা এখন বক্তৃতা করে বাসায় যেতে পারছি, আমাদের এখন পুলিশ ধরছে না, গোয়েন্দা পুলিশ খুঁজছে না, হ্যাঁ এটা হয়েছে। এ ধরনের কথা আপনারা বললে মানুষ অন্যকিছু ভাববে। ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনের পুনরুত্থান হবে।

সরকার এখনও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি বলে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, পতিত স্বৈরশাসক বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। তাদের চিহ্নিত করুন, মধ্যসত্ত্বভোগীদের আইনের আওতায় আনুন। রাস্তায়-রাস্তায় এখনও গাড়িতে চাঁদাবাজি করছে। বিএনপি এসব বন্ধের চেষ্টা করতে পারে, কিন্তু বন্ধ করতে পারবে না। এর দায়িত্ব সরকারের।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) প্রশাসনে শেখ হাসিনার পোকামাকড় রেখে দিলে দেশ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন কীভাবে? নারায়ণগঞ্জে যে এসপির গুলিতে আন্দোলনকারী শাওনকে হত্যা করা হলো তাকে প্রমোশন দিয়ে ঢাকায় নিয়ে এলেন। তাহলে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হত্যা বন্ধ করবেন কীভাবে। যে পুলিশের কারণে রাজপথ রক্তাক্ত হয়েছে উল্টো তাদের ভালো পোস্ট দিলে বর্তমান সরকার এবং পরবর্তী সময়ে যারা আসবে তাদের জন্য ক্ষতিকর।  

কৃষক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কৃষক দল বাজার দরে কৃষিদ্রব্য কিনে কম মূল্যে বিক্রি করছে। বগুড়া থেকে কম মূল্যে বীজ কিনে কুড়িগ্রামে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করছে। এর জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে কৃষক দলকে ধন্যবাদ জানাই। এখন আন্দোলন নেই, কিন্তু বিএনপির কেউ বসে নেই। জনস্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। 

কৃষক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আসজাদুল আরিস ডলের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব মিঠুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলক, দপ্তর সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শামসুর রহমান শামস প্রমুখ।

এএইচআর/এসএম