গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা দেশে লাশের সারি যত দীর্ঘ করেছে, জনগণ প্রতিবাদের সারি ততই তীব্র করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে বংশাল থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

বংশাল থানা আমির মাহবুবুল আলম ভূইয়ার সভাপতিত্বে বংশাল সুরিটোলা প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, এফবিসিসিআই'র সাবেক পরিচালক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী হাফেজ এনায়েত উল্লাহ।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এই যুদ্ধে তারা জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে জনগণকে হত্যা করেছে। গণহত্যা চালিয়ে এ দেশের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের জীবন কেড়ে নিয়েছে। ওই যুদ্ধে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা তার নিজ দেশ ভারতে চলে গেছে।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ৩০০ ভুয়া এমপি ও সব মন্ত্রীরা পালিয়ে গেছে। কোথাও তাদের দেখা যায় না। জাতীয় মসজিদের ইমামও পালিয়ে গেছে। যেটি পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগসহ পুরো প্রশাসন এমনকি মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনও নিয়োগে দলীয় আর আত্মীয়করণ করেছে। আওয়ামী লীগ কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে খুন, গুম, হত্যা, হামলা-মামলা, রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে, জনগণ তাদেরকে নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। জামায়াত জনগণের মাঝে ছিল আছে এবং থাকবে। 

আব্দুস সবুর ফকির বলেন, নারায়ে তাকবীর স্লোগানে শেখ হাসিনার গদি ও হৃদয় কেঁপে উঠত। তার দোসর পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারসহ পুলিশের মধ্যে থাকা ছাত্রলীগ-যুবলীগের গায়ে আগুন জ্বলতো। যার কারণে তারা নারায়ে তাকবীর স্লোগান বন্ধ করতে চেয়েছে। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন আল্লাহ এ দেশের জনগণের মাধ্যমে পূরণ করতে দেয়নি। 

মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন বলেন, জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতাও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেনি। তাদের অপরাধ ছিল তারা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের আন্দোলন করছে। তাদের নেতৃত্বে জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন হচ্ছে। এ দেশের জনগণের প্রত্যাশিত মানবিক ও কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে। 

ড. আব্দুল মান্নান বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে তাকবীর বন্ধ করতে চেয়েছে। জনগণ তাদেরকেই নিষিদ্ধ করে তাদের দাদার বাড়ি ভারতে বিতাড়িত করেছে। শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত চলে যায়, তার মেয়েও ভারত চলে যায়। ভারত প্রেমই তাদের মধ্যে কাজ করে। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ব ছিল বলে তারা কখনোই মনে করেনি।

জেইউ/এমজে