বিএনপি আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাচ্ছে সেই নিশ্চয়তা তারা কোথায় পেয়েছেন তা জানতে চেয়েছেন ইসলামি আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) পুরানো পল্টন ইসলামি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একশ দিনের কার্যক্রম ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রেজাউল করিম বলেন, বিগত স্বৈরাচার আমলে বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা যে ধরনের নিপীড়নের শিকার হয়েছে তা অবর্ণনীয়। স্বৈরাচারের পতনের পর সবারই প্রত্যাশা ছিল, আর যাই হোক আগামীতে যেন আর কোনো স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে। কিন্তু অস্বস্তির সঙ্গে আমরা লক্ষ করছি যে, বিএনপির নেতৃবৃন্দ সংস্কারের চেয়ে নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন এবং নির্বাচনকেই মুখ্য করে তুলছেন। এমনকি সংস্কার কার্যক্রমের বৈধতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলছেন। তারাই ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার করবেন বলে ঘোষণা দিচ্ছেন।

চরমোনাই পীর বলেন, প্রথম কথা হলো, তারাই (বিএনপি) আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাচ্ছেন সেই নিশ্চয়তা তারা কোথায় পেলেন? আবার তারা ক্ষমতায় গেলেও জনতার কাঙ্ক্ষিত সংস্কার করবেন তার নিশ্চয়তা কি? বিগত ১/১১ এর সরকার এবং তাদের হাত ধরে আওয়ামী ফ্যাসিস্টের জন্মের সূচনা কি বিএনপির ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপপ্রয়াসের ফসল নয়? বিএনপির ইতিহাস কি তাদের ওপরে আস্থা রাখার মতো ভরসা দেয়? দেয় না। সেজন্যই আমরা আগে সংস্কার, আগে স্বৈরাচারের উত্থানরোধে সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন, তারপর নির্বাচন আয়োজনের আলাপ তোলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

ইসলামি আন্দোলনের আমির বলেন, আগামীতে যেন কোনো স্বৈরাচারের উত্থান না হয় সেজন্য আমরা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন বা পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিগত ১৬ বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এর পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন সেজন্য তাদেরকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি। আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, বিএনপি এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছে। তাদেরকে বলবো, ক্ষমতার কেন্দ্রীভবনই স্বৈরাচার জন্ম দেয়। ক্ষমতা যাতে কোনো একক দলের হাতে একীভূত না হয় সেজন্যই পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি, আপনারা যেমন রাজনৈতিকভাবে স্বৈরাচার বিরোধী তেমনি মানসিক ও পদ্ধতিগতভাবেও স্বৈরতন্ত্র বিরোধী। তাই যদি হয় তাহলে আপনারাও পিআর পদ্ধতির প্রতি সমর্থন জানাবেন বলে আশা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মুহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ।

এএসএস/এমএসএ