সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দুর্বৃত্তদের হেনস্তার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মশাল মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পল্টন মোড়, প্রেস ক্লাব, বিজয়নগর পানির ট্যাংকি মোড় ঘুরে আল রাজীর কমপ্লেক্সের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

মশাল মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা নানা ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে। জেনেভায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে হেনস্তাকারীরা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী। এমন হেনস্তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। হেনস্তাকারী সবার পাসপোর্ট বাতিল করতে হবে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সফরসূচি/ফ্লাইটসূচি সন্ত্রাসীরা কীভাবে জানল, সেটা অনেক বড় প্রশ্ন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত ফ্যাসিবাদের দোসররা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আসিফ নজরুল গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

গণঅধিকার পরিষদের এ নেতা বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ ছিল, আজ একটা গোষ্ঠী ছাত্র-জনতার ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। কোনোভাবে এই ঐক্য বিনষ্ট হলে পতিত ফ্যাসিবাদ এর সুযোগ নিতে পারে। তাই আমাদের এই ঐক্য নষ্ট করা যাবে না। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর দখলদারি, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি করেছে। তাদের পতনের পর এসব বন্ধ হয়নি, কেবল হাত বদল হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুইটা বিষয় স্পষ্ট করতে হবে– এক সংস্কারের রোডম্যাপ, দুই নির্বাচনের রোডম্যাপ। এই দুইটা বিষয় স্পষ্ট করতে দেরি হলে সরকারের প্রতি মানুষের সংশয় সন্দেহ সৃষ্টি হবে।

দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান বলেন, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আওয়ামী লীগের যেসব সন্ত্রাসী অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল স্যারকে হেনস্তা করেছে তাদের পাসপোর্ট বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তারা আসিফ নজরুল স্যারকে হেনস্তা করে গণঅভ্যুত্থানকে হেনস্তা করতে চেয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটা সন্ত্রাসী দল। বিগত ১৭ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এ দেশের মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন করেছে। দেশের মানুষকে গুম খুন করেছে। গণঅভ্যুত্থানের পরও তাদের আচরণ পরিবর্তন হয়নি। অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো অনুশোচনা নেই। এমন বর্বর শাসন, এত গুম, খুন, হত্যা নির্যাতন এবং জুলাই-আগস্টের নির্মম গণহত্যার পরও তাদের যে আস্ফালন তাতেই প্রমাণ হয় তারা কোনো অনুশোচনা করছে না। তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতসহ আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠন এবং জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

মশাল মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান। অর্থ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান খান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, পেশাজীবী অধিকার পরিষদ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হোসেন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, যুব অধিকার পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান শুভ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম আপেল প্রমুখ।

এসএসএইচ