গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রশাসন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পুরো প্রশাসন ব্যবস্থা নাগরিক সেবার পরিবর্তে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হওয়ায় জনগণ তার সঠিক সেবা পাচ্ছে না বলে দাবি করেছে এবি পার্টি।

দলটি নেতৃবৃন্দ বলছেন, বিসিএস ক্যাডারের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ঢোকার সাথে সাথে বেশির ভাগ ব্যক্তি নিজেকে জনগণের সেবক ভাবার পরিবর্তে জনগণের মালিক হিসেবে হাজির হয়। ফলে জনপ্রশাসনের সব কার্যক্রম জনভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে।

রোববার (৩ নভেম্বর) জনপ্রশাসনে অরাজকতা নিরসন ও সংস্কার বিষয়ে করণীয় নিয়ে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন দলের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে পার্টির পক্ষ থেকে মূল বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবি পার্টির আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার ও যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান ও মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন।ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ঔপনিবেশিক আমলের প্রশাসনিক কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা সম্ভব নয়। তিনি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ পুনর্বিনির্মাণে এবি পার্টির পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

এবি পার্টির ৯ দফা প্রস্তাবনা

১. সরকারি চাকরিতে ক্যাডার ভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে জাতীয় পুল তৈরি করা দরকার;

২. পুরাতন আমলের চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া, পরীক্ষা পদ্ধতি এবং ভাইভা গ্রহণের বদলে শারীরিক, মানসিক, মানবিক ও মেধার সৃষ্টিশীলতা যাচাই করবার আধুনিক পদ্ধতি চালু করতে হবে;

৩. ⁠বাংলাদেশ পূর্ব আমলে আমলাদের প্রশিক্ষণের দুই বছর মেয়াদি কোর্স চালু করতে হবে;

৪. স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারে নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকুরির যোগ্যতা ও শর্ত আলাদা করে উল্লেখ করে জাতীয় পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগ করতে হবে;

৫. পিএসসি ও জনপ্রশাসন কেন্দ্রিক নিয়োগের বদলে প্রতিটা মন্ত্রণালয়ের আলাদা বিশেষায়িত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে;

৬. ক্যাডার/নন-ক্যাডার এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূরীকরণে মেধা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা এবং বেতন-ভাতাসহ সুবিধাদির বিষয়ে ইনসাফ ভিত্তিক সমাধান করতে হবে;

৭. পিএসসি’র বাহিরেও ক্যারিয়ারের যেকোনো পর্যায়ে আমলাতন্ত্রে যোগ দেওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। প্রবাসী অসংখ্য যোগ্য ও দক্ষ লোকদেরকে কীভাবে জনগণের খেদমতে নিয়োজিত করা যেতে পারে, সেটার পথ উন্মুক্ত রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিকত্বের কোনো আইনি বাধা থাকলে সেটা দূর করতে হবে;

৮. ⁠জনগণের সেবা ও খেদমত কে কেন্দ্রে রেখে পুরো প্রশাসন যন্ত্রকে প্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তোলা দরকার;

৯. জনপ্রশাসন সংস্কার কমিটি ঢেলে সাজানো দরকার, এই খাতের বিশেষজ্ঞসহ সরকারি চাকরির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

জেইউ/এমএ