ফাইল ছবি

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, অনেকে বলেন আমরা দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা লাভ করেছি। স্বাধীনতা লাভ করা সহজ কিন্তু রক্ষা করা কঠিন। এই সরকারকে টিকিয়ে রাখা বা সফলভাবে গণতান্ত্রিকভাবে জনগণের সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করা রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব।

সোমবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।

সরকারের রূপ তিন ধরনের উল্লেখ করে জয়নুল আবেদীন বলেন, তিন ধরনের সরকার আমাদের ছিল। স্বৈরশাসক, গণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট সরকার। স্বৈরশাসকরা আন্দোলনের এক পর্যায়ে বিদায় নেয়। ফ্যাসিস্ট সরকার অস্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতাচ্যুত হয়। গণতান্ত্রিক সরকারের বিদায় হয় জনগণের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।

‘আওয়ামী লীগ সরকার যে ফ্যাসিস্ট রূপ ধারণ করেছিল তারও একটা প্রেক্ষাপট আছে। আদালতকে ব্যবহার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যখন বাতিল করল তখন তারা বুঝতে পারলেন, আমরা যা করব তার জন্য জনগণকে আর জবাব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। অর্থাৎ তারা নিজেরা ক্ষমতা মালিক বনে যান, জনগণ না। এটাই তাদের মধ্যে কাজ করেছে। যে কারণে তারা দেশে লুটপাট, অরাজকতা, গণতন্ত্রহীনতা, মানবাধিকারের লঙ্ঘন তারা গত ১৭ বছর করেছেন।’

তিনি বলেন, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনসহ সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছিল। তবুও আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেয়নি। পরে এলো ছাত্ররা। ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রূপ নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করেছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হচ্ছে সেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল।

জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি, যারা মূলত এই দেশটাকে ধ্বংস করেছে তারা কিন্তু খুব কম সংখ্যক গ্রেপ্তার হয়েছে। এখনও দেখতে পাচ্ছি সর্বোচ্চ আদালতে বিচরণ করতে যাচ্ছে। এই দেশকে রক্ষা করতে হলে এই সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, আপনারা অনেকগুলো সংস্কার কমিটি গঠন করেছেন। কিন্তু আমরা সব সংস্কার কমিটির রূপরেখা পাইনি। বিশেষ করে সংবিধান সংস্কার কমিটির যে প্রধান তার নাম এখনও জানি না। একটা দেশের সংবিধান হচ্ছে চালিকা শক্তি। সেই সংবিধান যদি আমরা ভালোভাবে সংস্কার করতে না পারি, তাহলে আমাদের জন্য খুবই কঠিন ব্যাপার হবে।

যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ত করে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিমের আহ্বানে গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বরকতুল্লাহ বুলু, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও সাবেক ডাকসু ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত কাইয়ূম, ঢাবি শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সারজিস আলম, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ শামসুল হুদা, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদ সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণঅধিকার পরিষদ সদস্য সচিব ফারুক আহমাদ, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ।

জেইউ/এসএসএইচ