গত তিনটা নির্বাচনে জাতি বঞ্চিত ছিল। আগামী নির্বাচনে যাতে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ উপহার দেওয়া যায় সেজন্য মৌলিক কিছু প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম শুরুর আগে যমুনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কিছু মৌলিক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে বাইরে বের হয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এ সরকার একটা নির্দলীয় সরকার। তারা দেশ শাসনে আসেনি। দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য তারা এসেছেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গত তিনটা নির্বাচনে জাতি বঞ্চিত হয়েছে। আগামীতে জাতির সামনে একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া মূল কাজ। সেজন্য মৌলিক বিষয়ে তাদের কিছু সংস্কার করতেই হবে। কি কি মৌলিক বিষয়ে সংস্কার করা উচিত সে বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।

তিনি বলেন, আগামী ৯ অক্টোবর জাতির সামনে আমাদের প্রস্তাবগুলো তুলে ধরব। অবিলম্বে আমরা আমাদের চিন্তা জাতির সামনে তুলে ধরব। কি কি সংস্কার এই মুহূর্তে প্রয়োজন, কি কি সংস্কার পরবর্তী সময়ে লাগবে সেই বিষয়গুলো জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে।

জামায়াত আমির বলেন, জনগণ এবং সরকার একসঙ্গে কীভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত করতে পারে, সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কথাবার্তা হয়েছে। আমরা আশা করছি, বর্তমান যে সরকার আছে তারা কোনো ধরনের পক্ষ-বিপক্ষের মানসিকতা না নিয়ে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেশকে একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবে।

শফিকুর রহমান বলেন, আমরা শুরু থেকে বলে আসছিলাম সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই। সেই যৌক্তিক সময়টা কি হবে? এটা নিয়ে অচিরেই আমরা কাজ করব। এটা দেরি হবে না, এভাবে আমরা সামনে এগোতে চাই।

তিনি বলেন, দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য করণীয় কি এমন একটি প্রশ্ন এসেছিল। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। জনগণের সঙ্গে সরকারের পার্টনারশিপ লাগবে। জনগণের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণ যদি একসঙ্গে কাজ করে একটা অভূতপূর্ব দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মের ভাই-বোনেরা উদযাপন করতে পারবেন।

সংস্কারকে এক নম্বর গুরুত্ব দিচ্ছেন জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, সংস্কারের টাইমলাইন কি হবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দুইটা বিষয় দেশবাসীর পক্ষ থেকে চেয়েছি এবং সরকারের কাছে জানিয়েছি। একটা রোড ম্যাপ হবে সংস্কারের, আরেকটা নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলে নির্বাচন সফল হবে। দুইটা বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কর্মসূচিতে জামায়াতের নেতৃত্বে দিয়েছেন আমীরে জামায়াত ডা.শফিকুর রহমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন।

এমএসআই/জেইউ/এসএসএইচ