জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হাত থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর স্মরণে আয়োজিত নাগরিক শোক সভায় এ কথা বলেন তিনি।

গোলাম পরওয়ার বলেন, রুহুল আমিন গাজী ছিলেন নির্যাতিত ও মজলুম সাংবাদিক। ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে তাকে বিনাবিচারে, বিনা-অপরাধে ১৮ মাস কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সে সময় তাকে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে দেওয়া হয়নি, এমনকি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও খাবার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

দলের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বহু সাংবাদিক ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেছিলেন কিন্তু রুহুল আমিন গাজী কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। গণতন্ত্র রক্ষায় আজীবন সামনের সারি থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের বিদায় হলেও ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের দায়ের করা মামলা কেন বাতিল হয়নি? কেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে?

আইন উপদেষ্টা কি ফ্যাসিবাদের কর্মকাণ্ড ভুলে গেছেন? প্রশ্ন রেখে রফিকুল ইসলাম খান, দ্রুত মাহমুদুর রহমানসহ সকল সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নামে করা ফ্যাসিবাদের সাজানো মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

নাগরিক শোক সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সৎ, নিষ্ঠাবান, আদর্শবান ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক ছিলেন সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী। যখন কোনো পেশাজীবী কিংবা বিপ্লবী জনতাকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার আদায়ের দাবিতে রাস্তায় দাঁড়াতে দেয়নি, তখনও রুহুল আমিন গাজীর নেতৃত্বে জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বর থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হয়েছে। এজন্য তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে থাকে দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সেখান থেকেই রুহুল আমিন গাজী অসুস্থ হয়ে অল্প দিনের মধ্যেই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। যারা রুহুল আমিন গাজীসহ সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করতে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে তাদের বিচার বাংলার জমিনে হবে।

সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর স্মরণে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নাগরিক শোক সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, দ্য ডেইলি নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান প্রতিবেদক মোরসালীন নোমান, বাংলাদেশ ফেডারেলের সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি এ.কে.এম মহসীন, সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহজাহান সাজু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি কবি রফিক মোহাম্মদ, সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক জাহিদ চৌধুরী, ফেনী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সিদ্দিক আল মামুন, মুন্সীগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ- সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহ্ নেওয়াজ, এটিএন বাংলার নির্বাহী পরিচালক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ প্রমুখ।  

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, পল্টন থানা আমির শাহীন আহমেদ খানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জেইউ/এসকেডি