জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাধ্যমে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাই এই বিজয়কে টেকসই ও অর্থবহ করতে জামায়াতের রুকনদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি দলমত, ধর্ম-বর্ণ বাছ-বিচার না করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে জামায়াতের সব জন শক্তির প্রতি আহ্বান জানান।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাহপুরে পলওয়েল কনভেনশন সেন্টারে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত এক সদস্য (রুকন) সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি, অঞ্চল পরিচালক ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা আবুল ইহসান এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন প্রমুখ।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ঘরের খুঁটি হচ্ছে রুকন। রুকন শব্দের অর্থ পিলার, খুঁটি ও স্তম্ভ। মূলত ভার বহন করতে সক্ষম এমন কিছুকেই রুকন বলা হয়। পবিত্র কালামে হাকিমে এই শব্দটি দুই স্থানে এসেছে। আর সাংগঠনিক পরিভাষায় এটি খুবই তাৎপর্যময় ও গুরুত্বপূর্ণ। মূলত রুকনরাই সংগঠনের মূল শক্তি এবং বাইয়াতের কর্মী। তাই তারা যেমন মর্যাদাবান, সর্বোপরি তাদের দায়িত্বও অনেক বেশি। তাই জামায়াতের শপথের কর্মীদের নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি সৃষ্টিতে আত্মনিয়োগ করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনে যোগ্যতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিতে নিজেদের যোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য কোরআন, সুন্নাহ ও ইসলামী সাহিত্যের যথাযথ অনুশীলন করতে হবে।

তিনি বলেন, একটি সফল বিপ্লবের জন্য মানুষের ঘরে দাওয়াত সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে রুকনদের যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াত একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি কোনো গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয়, বরং যোগ্য ও আদর্শবাদী মানুষ গড়ার আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে আগামী দিনে নিজেদের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধির জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াত আগামী দিনের জন্য অতি সম্ভাবনাময় ও প্রত্যয়ী শক্তি। একইসঙ্গে জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। জামায়াতের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়েছে; সৃষ্টি হচ্ছে গণজোয়ার। তাই এই ইতিবাচক ধারাকে কাজে লাগাতে জামায়াতের সব স্তরের জনশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে-ময়দানে কাজ করতে হবে। আর দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াতের রুকনদেরই পালন করতে হবে অগ্র সৈনিকের ভূমিকা।

সভাপতির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, হাজারো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদরা আমাদের জাতীয় বীর; গর্বিত ও শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের রক্তের পথ ধরেই জাতির বিজয় সোপান রচিত হয়েছে। তাই জাতীয় স্বার্থেই শহীদদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।

জেইউ/এসএসএইচ