ভিপি নুরুল হক নুর ও ড. রেজা কিবরিয়ার বিরোধীতায় বিভক্ত হওয়া গণঅধিকার পরিষদের দুপক্ষকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা। এক্ষেত্রে তারা ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন। যদি এই দাবি না মানা হয় তাহলে গণঅবস্থানসহ বিভিন্ন কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি প্রদান করেছেন তারা। 

শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুশিয়ারি প্রদান করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য দুপক্ষকে কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। 

দাবিগুলো হলো- 

১. উভয় পক্ষকে ব্যক্তি আক্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

২. অতীতের কার্যক্রম নিয়ে কোনো প্রকার টানাটানি করা যাবে না।

৩. উভয় পক্ষের মূল দলের কেন্দ্রীয় কমিটি স্থগিত করে আলোচনায় বসতে হবে।

এছাড়া সমাধানের পথ হিসেবে উভয় পক্ষের নিকট একটি রূপরেখা প্রস্তাব করা হয়। তা হলো- সাংগঠনিক কার্যক্রমের গতিশীলতা ধরে রাখার জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন উপদেষ্টা কমিটি ও নিরপেক্ষ শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করা।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণ অধিকার পরিষদের কর্মী মো. আল আমিন আটিয়া আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, গণঅধিকার পরিষদের তৃণমূল পর্যায়ে থেকে আমরা সংগঠনের দুপক্ষকে আলোচনায় বসার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। যদি এই সময়ের মধ্যে তারা আলোচনায় না বসেন তাহলে জাতীয় প্রেস ক্লাব বা যে কোনো জায়গায় আমরা যুব, গণ ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা গণঅবস্থান শুরু করবো।

দুপক্ষের শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যদি আপনারা ঐক্যবদ্ধ না হন তাহলে আগামীতে আপনাদের অবস্থা হবে ছোটখাটো দোকানদারদের মত। দুচারজন কর্মী নিয়ে আপনাদের বসে থাকতে হবে।

এক লিখিত বক্তব্যে আল আমিন বলেন, ছাত্র-জনতার এক রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২য়বার স্বাধীনতা লাভ করেছে। এই স্বাধীনতাকে রক্ষার জন্য প্রয়োজন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার কারণে আওয়ামী লীগ আজ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। ২০১৮ সালে কোটাসংস্কার আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠে ছাত্র অধিকার পরিষদ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সংগঠনটি রাজপথে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কারণে সারাদেশব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। জনগণের ব্যাপক আস্থা অর্জন করতে শুরু করে যা আগামীর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য জনগণের দল হিসেবে ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা তৈরি করে।

তিনি বলেন, হঠাৎ করে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি হয়। যার কারণে তৃণমূলে নেতাকর্মীদের গণঅধিকার পরিষদ এর কার্যক্রমে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। বেশিরভাগ জেলা ও মহানগরে দ্বৈত কমিটির নেতৃত্ব থাকায় জনগণ বিভ্রান্ত হচ্ছে। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ছাত্র অধিকার পরিষদ বাংলা কলেজের সিনিয়র সহ-সভাপতি  মো. আনোয়ার হোসেন, নেত্রকোনা জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম ও সহ-সভাপতি রয়েল খানসহ অনেকে।

কেএইচ/এমএসএ