স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে বিভিন্ন বাজার মনিটরিং শুরু হলেও চালসহ নিত্যপণ্যের দাম এখনো নিয়ন্ত্রণহীন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

রোববার (১৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ কথা বলেন।

তারা বলেন, চালের বাজারে অস্থিরতা চলছে এখনো। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মূল্যবৃদ্ধির জন্য একে অপরকে দোষারোপ করলেও পর্দার অন্তরালে এখনো বাজার সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

তারা আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জনতার বিজয়ে দেশকে ভবিষ্যতে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট মুক্ত করতে বিশেষ করে বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে নতুন করে বাজার ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানোর এখনই উপযুক্ত সময়।’  

নেতৃদ্বয় বলেন, বাজার সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য সরকারকে দ্রুততম কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নতুন করে যেন কেউ চাঁদাবাজিসহ হিডেন চার্জ নিতে না পারে, সেই ব্যাপারে সরকারসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সবাইকে মনে রাখতে হবে বিগত সময় সাধারণ মানুষ এক প্রকার জিম্মি হয়ে ছিল। বাজারের শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কাছে সাধারণ মানুষ দিন দিন নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছিল। ছাত্র জনতা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে বিজয় এসেছে তাতে ভবিষ্যতের নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাজার ব্যবস্থাপনাকে নতুন করে সাজাতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় থাকে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

তারা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষ একবারেই নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষ যে টাকা আয় করতো তা দিয়ে কোনো রকমে মাসটা কেটে যাচ্ছিল। সঞ্চয় করার কোনো সুযোগই ছিল না। পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকতেন। তার কান পর্যন্ত গরিবের আর্তনাদ পৌঁছায়নি। যারা সরকারে বসেছেন তাদের উচিত প্রথমেই বাজার ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠুভাবে ঢেলে সাজানো। যেন অবৈধ ব্যবসায়ীরা কাউকে জিম্মি করতে না পারে। যে যেভাবে খুশি পণ্যের দাম হাকাতে না পারে।

নেতৃদ্বয় বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে একটি শক্তিশালী বাজার মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। সেই সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ যেন নির্বিঘ্নে হয় সেই ব্যবস্থাও নিতে হবে। পুরো সিস্টেমে কোথায় কি সমস্যা রয়েছে সেগুলো খুঁজে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণ মানুষ সব সময়ই আতঙ্কে থাকে। কখন কোন পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের খেয়াল খুশি মতো হুটহাট পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে ক্রেতাদের সঙ্গে খুচরা ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়।

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, গত কয়েক দিনে দেশে পণ্যমূল্য বেশ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। মূলত পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি বন্ধ থাকায় পণ্যের মূল্য কমেছে। দেশে পণ্যমূল্য যে কেবল চাহিদানির্ভর নয়, এ ঘটনা থেকে বিষয়টি আবারও প্রমাণিত হচ্ছে। সরকার পরিবর্তন ও সময়ের সুযোগ নিয়ে কোনো অশুভ শক্তি যাতে বাজার-রাস্তাঘাটের দখল নেওয়ার মাধ্যমে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার বিজয়কে ছিনিয়ে নিতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

এমএম/এমএ