চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিএনপির নেতারা নিজ দলের নেতাদের সঙ্গে হাতাহাতি ও বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

শনিবার (১৭ আগস্ট) উপজেলার ১২ নম্বর খৈইয়াছড়া ইউনিয়নের নয়দুয়ার এলাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম ইউসুপের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

মনিরুল ইসলাম ইউসুপের ছেলে নিয়াজ মোর্শেদ এলিট কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। 

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন সমর্থিত প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী তাদের অবরুদ্ধ করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দলের দুঃসময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী ত্যাগী মরহুম নেতাদের কবর জিয়ারত করতে শনিবার মীরসরাইয়ে আসেন গোলাম আকবর খোন্দকার। দুপুর ১২টার দিকে পথে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বড়তাকিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ইউসুপের বাড়িতে যান তিনি। এ খবরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন সমর্থিত নেতাকর্মীরা দলে দলে জড়ো হয়ে বাড়িটি ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এছাড়া, বাড়ির পার্শ্ববর্তী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। মনিরুলের বাড়িতে আসার বিষয় নিয়ে নুরুল আমিনের সঙ্গে গোলাম আকবর খোন্দকারের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়।

এ সময় নেতাকর্মীরা মনিরুল ইসলাম ইউসুপ ও নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের নাম ধরে বিভিন্ন স্লোগান দেন। খবর পেয়ে মীরসরাইয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে থাকা সেনা সদস্যরা বিকাল ৪টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে বিএনপি নেতা গোলাম আকবর খোন্দকারসহ অবরুদ্ধ নেতাকর্মীদের ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সাহায্য করেন। বিএনপি নেতাদের বহনকারী গাড়ির সামনে ও পেছনে নিরাপত্তা দেয় সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি। তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে নেতাকর্মীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, হাতাহাতির ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানি না। শুনেছি, গোলাম আকবর খন্দকার মনিরুল ইসলামের বাড়িতে এসে বৈঠক করায় উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ জানিয়েছেন।

গোলাম আকবর খোন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, মনিরুল ইসলাম ইউসুপ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং মীরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। শনিবার তিনি আমাকে চায়ের দাওয়াত দিলে আমি দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তার বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে দলের কিছু নেতাকর্মীর মুখে শুনি, ইউসুপ সাহেবের ছেলে যুবলীগ নেতা। এসব অভিযোগ কেউ তো আমাকে আগে দেয়নি। স্থানীয় নেতাদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে একটি অংশ জড়ো হয়েছে। এটি কোনো বিক্ষোভ নয়।

কেএ