ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ফেরাউন বুঝতে পারেনি যে নীলনদে ডুবে মারা যাবে। তেমনি হাসিনা সরকারও বুঝতে পারেনি যে পচা শামুকে পা কাটা যাবে। সকল অবিচারের হিসাব দিতে হবে। খুনি হাসিনাসহ সকল হত্যাকারী, বিদেশে অর্থপাচারকারী, দুর্নীতিবাজদের বিচার করতে হবে। পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে এনে বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করণীয় এবং আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ৯ দফা প্রস্তাবের বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশা করছে দেশবাসী। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি না মেনে খুনি হাসিনা সরকার নির্বিচারে ঠান্ডা মাথায় পাখির মতো গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এই বর্বর হত্যাযজ্ঞ দেখে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

রেজাউল করীম বলেন, জালেম সরকারের নির্বাচন কমিশনে জড়িতদের বিচার করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। দেশের সংখ্যালঘুদের জানমাল ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তা দেয়া ঈমানী দায়িত্ব।

নবগঠিত সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং সকল উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন সরকারের সকল ভালো কাজের সহযোগিতা করা হবে। আওয়ামী সরকারের দীর্ঘ স্বৈরশাসন অবসানের পর একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী দখলদারিত্ব, লুটতরাজে মেতে উঠেছে। দুর্নীতি ও জালিম সরকারের পথ ধরে এভাবে লুটপাটে মেতে উঠলে আমরা তাদেরকে ছেড়ে দেবো না। এখন সবাই মিলে রাষ্ট্র সংস্কার এবং একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছর আওয়ামী দুঃশাসন দেশের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, নির্বাচনকে করেছে নির্বাসিত। ব্যাপক লুটপাটের মাধ্যমে অর্থনীতিকে করেছে বিপর্যস্ত। বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক মুক্তি এবং রাষ্ট্রের সকল অসংগতি দূর করে দুর্নীতি দুঃশাসনমুক্ত উন্নত কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন এখন সময়ের দাবি। ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

সমাবেশে সংগঠনের ঢাকা মহনাগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্ব করেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমসহ অনেকে।

আরএইচটি/পিএইচ