প্রায় ১৩ বছর পর রাজধানীর মগবাজারে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, একটি সুবিধাবাদী দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী বিভিন্ন স্থানে সরকারি স্থাপনা, প্রতিপক্ষের বাড়িঘর এবং ক্ষেত্রবিশেষে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করছে। 

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেখানেই দুর্বৃত্তপনা দেখবেন, তৎক্ষণাৎ এদের প্রতিরোধ করতে হবে। আমরা কথা দিচ্ছি, বিদ্যমান প্রশাসনকে এ বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। 

অনেক মানুষের জীবনহানির মধ্য দিয়ে গতকাল একটি ‘পরিবর্তন’ আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা অতীব দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি, এই ধরনের পরিবর্তনের ঊষালগ্নে একটি সুবিধাবাদী দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়, শহরে এবং গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়, প্রতিপক্ষের বাড়িঘর এবং ক্ষেত্রবিশেষে কিছু কিছু জায়গায় সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আঘাত করেছে। কোথাও ভাঙচুর, কোথাও লুটপাট করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। যাদের অন্তরে বিবেক আছে, মানবতা আছে, তারা এগুলো করতে পারে না।’

দলের নেতা-কর্মীদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, এখন থেকে যেখানে মানুষের বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে, সেখানে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা যেন পাহারাদারের ভূমিকা পালন করেন।

যারা লুটপাট-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানিয়ে জামায়াতের এ শীর্ষ নেতা বলেন, ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই দেশে কোথায় কোন ফাঁকফোকরে কোন দুর্বৃত্ত কোন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসে, এই জন্য দুই-একটা সংগঠনের দ্বারা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এখানে আপামর জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাহলে অবশ্যই দুর্বৃত্তরা এই দুঃসাহস দেখাবে না। যারা ইতিমধ্যে এ কাজগুলো করেছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদের ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না। 

যিনি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তিনি বাংলাদেশের একজন গর্বিত নাগরিক— এ মন্তব্য করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এখানে কেউ সংখ্যালঘু নয় এবং কেউ সংখ্যাগুরু নয়। এ জন্য কে সংখ্যালঘু এ প্রশ্নটি আমাদের কাছে অবান্তর। আমরা এ সব দুর্বৃত্তপনা মানবতাবিরোধী কাজ মনে করি। আমরা জাতিকে আহ্বান জানাব, যেখানেই দুর্বৃত্তপনা দেখবেন, তৎক্ষণাৎ এদের প্রতিরোধ করতে হবে। আমরা কথা দিচ্ছি, বিদ্যমান প্রশাসনকে আমরা এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।’

জেইউ/এনএফ