খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। পাশাপাশি শ্বাসকষ্টও আছে তার।
চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছর ধরে খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ছিল। আগে তার সুগার লেভেল ৮ থেকে ১০ এর মধ্যে থাকত। কিন্তু গত ২-৩ দিন ধরে সেটা ১৬ থেকে ১৮ পর্যন্ত উঠছে। কখনো-কখনো সেটা ২০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এজন্য তাকে আরও কিছু দিন করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখতে হবে।
বিজ্ঞাপন
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হঠাৎ করে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ওঠা-নামার কারণে তার সম্পর্কে স্থির কিছু বলা যাচ্ছে না। এ কারণে ডাক্তার বা দলের নেতারা কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। তবে, আশা করা যায় বর্তমানে যে অবস্থায় আছে তাতে কয়েকদিনের মধ্যে তার ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্ট নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে। মূলত বয়সের কারণে খালেদা জিয়া করোনা পরবর্তী জটিলতায় কাবু হয়ে পড়েছেন বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার এক চিকিৎসক বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খবর নিয়মিত বিএনপি ও তার পরিবারকে জানানো হচ্ছে। কোন পরিস্থিতিতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে সেটা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকেও আপডেট দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে খালেদা জিয়ার প্রধান দুটি সমস্যা রয়েছে। একটি হচ্ছে শ্বাসকষ্ট, আরেকটি ডায়াবেটিস। কোভিড আক্রান্ত সব রোগীর কম-বেশি শ্বাসকষ্ট হয়। খালেদা জিয়ারও কিছুটা শ্বাসকষ্ট আছে। তবে আমাদের দেশের অন্য বয়স্ক রোগীদের মতো মাত্রাতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট নেই তার। আর ডায়াবেটিস তো তার পুরোনো রোগ। এখন কোভিডের কারণে সেটা কিছুটা অনিয়ন্ত্রিত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে আমি ডাক্তারদের কাছ থেকে ম্যাডামের চিকিৎসার খোঁজ নিয়েছি। এক ডাক্তার আমাকে বলেছেন, ম্যাডামের ফুসফুস থেকে কিছু পানি বের করা হয়েছে। কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি। তার চিকিৎসায় আগের ওষুধের সঙ্গে নতুন কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক যুক্ত করা হয়েছে। তবে, ডাক্তাররা তাকে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক জানিয়েছেন খালেদা জিয়াকে নিয়মিত অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। যদিও সেটার মাত্রা খুব বেশি নয়।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, এ বিষয়ে চিকিৎসকরা ভালো বলতে পারবেন। আমি কিছু জানি না।
আর খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকী এবং ড. আল মামুনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।
গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। গত সোমবার (৩ মে) সকালে খালেদা জিয়া শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এখনো সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
এএইচআর/এইচকে/জেএস