‘কোটা আন্দোলন নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই, তবে জনদুর্ভোগ, ধ্বংস, ভাঙচুর বা রক্তপাতের ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের যে কাজ সেটা করবে’ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। অন্যদিকে, ‘সময় মতো যথাযথ অ্যাকশন নেওয়া হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) পৃথক দুই স্থানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে এমন বার্তা দেন সরকারের শীর্ষপর্যায়ের দুই মন্ত্রী।

সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্ররা কারও শেখানো বুলি বলছে। এগুলো তাদের নিজেদের বুলি নয়। তারা ভুল করছে। আমি মনে করি, আদালতে এসে তারা তাদের দাবি বলুক।’

‘শিক্ষার্থীরা ভুল করছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলন পরিহার করে, তারা যেন ফিরে আসে। শিক্ষার্থীরা যেন ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে লিপ্ত না হয়।’ 

একই দিন সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলনের নামে জনগণের কোনো প্রকার দুর্ভোগ সরকার কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো প্রকার অবমাননা আমরা বেঁচে থাকতে হতে দেব না।’

‘ধৈর্য ধরা মানে দুর্বলতা না’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা জোর করে চড়াও হলে আপনারা কী প্রশ্ন করতেন? সময় মতো সব কিছু দেখবেন। যথাযথ অ্যাকশন নেওয়া হবে।’

২০১৮ সালের কিছু গুজব তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর বৃথা চেষ্টা চলছে।’

দেশে চলমান এ আন্দোলনে ‘জনগণের সম্পৃক্ততা নেই’ বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। 

প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের এক দফা দাবিতে মঙ্গলবারও উত্তাল রাজধানী ঢাকা। এ দিনও সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়, গাবতলী-মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, নতুন বাজার, মধ্যবাড্ডা থেকে শুরু করে নদ্দা/বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, কুড়িল বিশ্বরোড, মহাখালী-বনানী সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। 

সকাল থেকে ছোট ছোট দলে যুক্ত হয়ে তারা রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন। এ সময় তাদের নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। রাস্তা অবরোধের কারণে সড়কগুলোতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী।

সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা, গাবতলী-মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব), নতুন বাজার/সাতারকুল এলাকায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ), মধ্যবাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, নদ্দা/বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, কুড়িল বিশ্বরোডে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি), মিরপুর ১০ নম্বর মোড়ে বিইউবিটি ও মিরপুর বাঙলা কলেজ, মহাখালী-বনানী সড়কে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরায় সাধারণ শিক্ষার্থী, তাঁতীবাজার এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থী, বেইলিরোড মোড়ে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।