বড় আন্দোলনের পথে যেতে হবে : মান্না
দাবি আদায়ে বড় আন্দোলনে পথে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
শুক্রবার (১২ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে মঞ্চের উদ্যোগে ‘৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রুপান্তর’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
মান্না বলেন, যেরকম করে যুক্তফ্রন্ট, কংগ্রেস কর্মসূচি দিয়েছে, কেজরিওয়াল দিয়েছে, সেরকম করে এমন কর্মসূচি হতে হবে। এমনও হতে পারে, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলনে চলছে, সেটা আমাদের দাবিনামার মধ্যে আসতে পারে। যাতে ছাত্রদেরও আমরা অন্তর্ভুক্ত করতে পারি এবং বড় আন্দোলনের পথে পা বাড়াতে পারি। আমাদের সবাইকে মিলে লড়াইটা করতে হবে এই সরকারের পতনে। যেরকম করে ছাত্ররা গতকাল ব্যারিকেডে ভেঙেছে, সেরকম করে লড়াইয়ের চিন্তা করি।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, ৫৩-৫৪ বছরে পরে একটা জাতিরাষ্ট্রের নিয়োগ পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কোটা আন্দোলন ইতোমধ্যেই জনগণের মন স্পর্শ করেছে। ছাত্র-তরুণরা বাস্তবে সমগ্র জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করছে।
কোটা সংস্কার মামলা মোকাদ্দমার বিষয় না বলে উল্লেখ করে সাইফুল হক বলেন, এটা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক বিষয়। সুতরাং আজকে সরকারকে নীতিগতভাবে কোটা সংস্কারের দাবি গ্রহণ করে খুব দ্রুত একটা কমিশন গঠন করে কীভাবে মেধার ভিত্তিতে আমাদের চাকুরি নিয়োগ হবে সেব্যাপারে কার্যকর বিশ্বাসযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
ভারত ও চীনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কোনো কিছুই নিয়ে আসতে পারেননি, খালি হাতে এসেছেন’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চীন সফর সংক্ষিপ্ত করে তিনি ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেছেন। সরকার ও সরকারি দলে কোনও হাসি নাই। ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা খবর দিয়েছেন, ডাল ম্যা কুচ কালা হ্যায়।
প্রধানমন্ত্রী যে আশা নিয়ে বেজিংয়ে গিয়েছিলেন সেই আশা এবারও তার পূরণ হয়নি বলে দাবি করেন এই বাম নেতা।
তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে যেমন কিছু আনতে পারেননি, তারা চীন থেকেও তাদের প্রত্যাশা মতন কোনোকিছুই বাস্তবে আনতে পারেননি। আমি মাঝেমধ্যে বলি- একটা কথা আছে, যে ব্যক্তি একইসঙ্গে দুইটা খরঘোশের পেছনে দৌড়ায়, সে একটা খরঘোশও ধরতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর দুই খরঘোশের পেছনে দৌড়াতে গিয়ে তার আম ও ছালা দুটোই এখন যাওয়ার জোগাড় হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এই রাষ্ট্রটাই জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে যে, তাকে দমন করে শাসন করে লুট করবে। এই রাষ্ট্র তার দাপট দেখাবে…এটাই সরকার কাজ। এটাকেই তারা চিরস্থায়ী করতে চায়। তার বিরুদ্ধে আজকে বাংলাদেশের বিরোধীদলগুলো একটা ঐক্য গড়ে তুলেছেন। এভাবে রাষ্ট্রটা চলতে পারে না, এরকম শাসন চলতে পারে না।
সরকার কোনও কথাই শুনছে না বলে মন্তব্য করে সাকি বলেন, আমাদের আন্দোলনের জায়গায় যেতে হবে। মানুষ আশা করে বিরোধীদলগুলো আবার বড় আকারের সংগ্রাম গড়ে তুলে এই সরকারকে বিদায় করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। সেই লড়াই গড়ে উঠবে এই আশাবাদ আমি রাখছি।
তিনি আরও বলেন, সমাজের নানা অংশ আজকে জেগে উঠছে। বিশেষ করে ছাত্র সমাজ যেভাবে জেগে উঠছে, শিক্ষকরাও পর্যন্ত আন্দোলন করছে। সরকার নিজের পক্ষের লোকদেরও আর রাখতে পারছে না। এই ফ্যাসিস্ট শাসন সমাজের সমস্ত অংশে তাদের সমস্ত অধিকার ও তাদের মর্যাদা কেড়ে নিচ্ছে। এই লড়াইগুলো আরও জোরদার হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি মিয়া মসিউজ্জামান, অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অনেকে।
এএইচআর/পিএইচ