জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, আজকে আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় সংকট নৈতিকতা সম্পন্ন ভালো মানুষের। এই দুনিয়ার সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করেও একজন ভালো মানুষকে তৈরি করা সম্ভব নয়। অথচ সেই চ্যালেঞ্জিং কাজটিই করছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির।

এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার উদ্যোগে এসএসসি/দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থীদের এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সভাপতি জাফর সাদিকের সভাপতিত্বে এবং শাখা সেক্রেটারি মুজাহিদ আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদ বলেন, শিক্ষার এই সময়ে সবচেয়ে বড় ঘাটতি হচ্ছে এটা যে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের মতো করে কুরআন-হাদিস তথা সুন্নাহর শিক্ষা প্রচার করবে কিন্তু কোনো শিক্ষার্থীকে এটা বুঝতেই দেবে না এটাই কুরআনের বক্তব্য। নিজেদের কথা বলে তা সবখানে কৃতিত্ব দেখাবে। একজন মুসলিম শিক্ষার্থী হিসেবে মহান আল্লাহর দেওয়া শিক্ষায় খুব সচেতন থেকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। দুনিয়ার কোনো ফলাফল অর্জন যেন আমার একমাত্র লক্ষ্য না হয়। পরকালীন মুক্তির জন্যই যেন আমার সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে।

আজকে সবচেয়ে বেশি সৎ মানুষের প্রয়োজন উল্লেখ করে ছাত্রশিবিরের সাবেক এ কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ৩৫০ জন মেধাবী ছাত্র যুবককে হত্যা করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালন করা হয়। এগুলো কারা করেছে? তাদেরই সহপাঠী অন্য শিক্ষার্থীরা। আশ্চর্য এতো পড়ে পড়ে তাহলে আমরা কী পেলাম। সন্ত্রাসী, খুনি, মাস্তান জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্র এদেশের জন্য, এ জাতির জন্য তাহলে কি কল্যাণ বয়ে আনছে? ১২৪ বছর পার হয়ে গেলেও অনেক মাদরাসায় কোনো সহপাঠী তার বন্ধুকে সামান্য ফুলের টোকাও দেননি। এটা সম্ভব হয়েছে সেখানে পবিত্র আল কুরআন ও হাদিস চর্চা হয় এজন্যই। এটাই পার্থক্য ইসলাম ও কথিত মডার্ন শিক্ষা ব্যবস্থায়।

তিনি বলেন, টাইটানিকের মতো বিশাল জাহাজ তৈরি করেও দাম্ভিকতা দেখানো হয়েছিল। মুহূর্তের মধ্যে সামান্য বরফ খণ্ডের কাছে ধাক্কা খেয়ে দৃশ্যপট ভয়াবহ হয়ে গেছে। পৃথিবীর কোনো কৃতিত্বের জন্য গৌরব স্থায়ী নয়। মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ই আমাদের সফলতায় প্রথম কথা হওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান ঘুণে ধরা এই সমাজকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সত্যিকার দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজেদেরকে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম, অবিচার, অব্যবস্থাপনা ও অশ্লীলতা যেন আমাদের মেধা ও যোগ্যতাকে ম্লান করে না দেয় সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে।

জেইউ/এসকেডি