গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে হওয়া ‘অসম চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক’ কোনোটাই বাংলাদেশকে লাভবান করবে না। বরং বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলবে। বাংলাদেশের জনগণ কোনভাবেই নিজের অর্থ খরচ করে পরের জন্য এই ঝুঁকি নিতে পারে না।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) তোপখানা রোডে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

‘সার্বভৌমত্ব বিরোধী, অসম চুক্তি’র প্রতিবাদে আগামী ৫ জুলাই সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, ভারত অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক বিকাশকে রুদ্ধ করতে চায়। কারণ দক্ষিণ এশিয়াকে একটা পিপলস ফেডারেশন ইউনিয়নে পরিণত করার ক্ষেত্রে স্বাধীন ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু ভারত তা হতে দিতে চায় না। এজন্য তারা সার্ককে পরিকল্পিতভাবে অকার্যকর করে রেখেছে।

তারা বলেন, দেশের মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে আওয়ামী লীগ সরকার যেসব অসম চুক্তি করছে সেটার তো একটা বিনিময় আছে। এই চুক্তির বিনিময়ে তারা গদিতে থাকতে চায়। ভারতকে নানাভাবে ট্রানজিট-করিডোর কিংবা সমুদ্র বিজ্ঞান ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ গবেষণা, ইত্যাদি চুক্তির নামে প্রকারান্তরে মোংলা বন্দর ভারতের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চান। উদারভাবে ভারতকে সহযোগিতার মাধ্যমে বর্তমান ডামি সরকার ভারতের সহায়তায় নিজেদের গদি রক্ষা করতে চায়।

পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহু বছর কথাবার্তা হচ্ছে উল্লেখ করে গণতন্ত্রের শীর্ষ নেতারা বলেন, একমাত্র গঙ্গা চুক্তি ছাড়া আরও যে ৫৩টি যৌথ নদী আছে, সেগুলোর কোনোটা নিয়ে আমরা চুক্তি করতে পারিনি। তিস্তা চুক্তি ২০১১ সালে প্রস্তুত হলেও তা স্বাক্ষর হয়নি। তার সঙ্গে আমাদের উত্তরাঞ্চলের দুই কোটি মানুষের ভাগ্য জড়িত।

মঞ্চের শীর্ষ নেতারা বলেন, নদী অংশীদার হিসেবে পানির হিস্যা আমাদের অধিকারের বিষয়। কিন্তু স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এই সফরে তিস্তার পানি বণ্টন নয়, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়েছে। যাদের হাতে তিস্তা ধ্বংস হয়েছে তাদেরই তিস্তা ব্যবস্থাপনার অংশীদার করার আলাপ করে এসেছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম ও জেএসডির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ।

এএইচআর/এসকেডি