বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। কিছু দিন পরপরই তাকে হাসপাতালে যেতে হয়। এবার যে তিনি গিয়েছেন, আল্লাহর অশেষ রহমত, তাকে আমরা ফিরে পেয়েছি। তার ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কঠিন ছিল, যদি ঠিক সময়ের মধ্যে ডাক্তার চিকিৎসা দিতে না পারতেন। 

বুধবার (২৬ জুন) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আপনারা জানেন, কিছু দিন পরপরই তাকে হাসপাতালে যেতে হয়। এবার যে তিনি গিয়েছেন, আল্লাহর অশেষ রহমত যে তাকে আমরা ফিরে পেয়েছি। তার ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কঠিন ছিল, যদি ঠিক সময়ের মধ্যে ডাক্তার চিকিৎসা দিতে না পারতেন। এই অবস্থার মধ্যে আমাদের চিকিৎসকরা বার বার বলেছেন, তাকে বাইরে উন্নত কেন্দ্রে নেওয়া উচিত। কিন্তু সরকার তাকে যেতে দিচ্ছে না। তারা পরিকল্পিতভাবে আদালতকে ব্যবহার করে সেটা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। এজন্য বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন জোরদার করার।

এই আন্দোলন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে করা হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এই দাবি জনগণকে সঙ্গে নিয়েই করছি। আমরা জনগণের কাছে প্রত্যাশা করব, জনগণ তাদের প্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার প্রাণ রক্ষা করা, তাকে মুক্ত বাতাসে রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে এবং তারা আন্দোলনের ঝাঁপিয়ে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনের সঙ্গে আপামর জনসাধারণ একাত্ম হবেন। আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলন করছে, আপনারা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করেছেন তারা অনেকে বিবৃতি দিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তার মুক্তির কথা বলেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার আটক করে রেখেছে। এটা আইন বিরোধী, সংবিধান বিরোধী। যেকোনো সাধারণ একজন মানুষের যদি পাঁচ বছরের সাজা হয়, সে সঙ্গে সঙ্গে জামিন পেয়ে যায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনি ইতোমধ্যে দেখেছেন, আমাদের দলেরই নেতারা অনেকে আছেন যাদের ১৩ বছর/১৪ বছর সাজা হয়েছে, তাদের জামিন দেওয়া হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের এই ধরনের সাজা হওয়ার পরে তাদের প্রত্যেকটা মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন, এমপি নমিনেশন পেয়েছেনে। তাহলে শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার ব্যাপারেই এটার মানে হচ্ছে এরা (সরকার) বিধানটাকে প্রয়োগ করার চেষ্টা করছেন। আপনি জামিন দিতে পারবেন না এরকম কোনো বিধান নাই।

তিনি বলেন, এটা তার প্রাপ্য, এটা সাংবিধানিক অধিকার। এখনো তার মামলা সুপ্রিম কোর্টের কাছে পেন্ডিং আছে। সুতরাং এই বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ যে তারা (সরকার) পরিকল্পিতভাবে তাকে কারাগারে আটক করে রেখেছে, সেটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। আপনি দেখবেন কারা কারা জামিন পাবে। সেখানে আছে বয়স্ক মহিলা, অসুস্থ মানুষ তারা জামিন পাওয়ার অধিকার রাখে। যত বড় মামলাই হোক।

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফরহাদ হালিম ডোনার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইয়েদুল আলম বাবুল, মাহবুবুল হক নান্নু, মনির হোসেন, বেনজীর আহমেদ টিটো, নজরুল ইসলাম আজাদ, তাবিথ আউয়াল উপস্থিত ছিলেন।

এএইচআর/এসএম