বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের ভুলনীতির খেসারত দিচ্ছে বন্যার্তরা। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, সিলেটের হাওর উন্নয়নের নামে চলছে অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ড। নদীতে বাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক গতি প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করার কারণেই বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই অঞ্চলে প্রতিবছর বন্যা হওয়ার পরেও ‘আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম’ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি সরকার।

তিনি বলেন, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার অঞ্চলে বন্যা ধ্বংসের তাণ্ডব চালাচ্ছে। বহু মানুষ বসতবাড়ি, ক্ষেতখামার প্রচণ্ড ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস কাছারি, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ ও ক্ষেতের ফসল।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, প্রতিবছর বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ প্রচণ্ড তাণ্ডবে সরকারের উদাসীনতা বিস্ময়কর। দেশের ভেতরের বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানিতে দিশেহারা মানুষ কোথাও নিরাপদ আশ্রয় পাচ্ছে না। ঘরের ভেতর উঁচু মাচা করার পরেও টিকতে পারছে না। এদিকে উত্তরপূর্বাঞ্চলের রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অবস্থাও মারাত্মক সঙ্গিন। উজানের ঢল প্রবল গতিতে নেমে আসায় সিলেট ও রংপুর বিভাগে নদীগুলো উপচে দুই পাশে প্রবল বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বিএনপির সব স্তরের নেতাকর্মীদেরকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জোর আহ্বান জানান রিজভী। ঈদের দিন রাতে বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার প্রবাসী মেয়ের গাড়ির সঙ্গে একটি বাইকের ধাক্কা লাগায় দুইজন বাইক আরোহীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে এসে আওয়ামী লীগের লোকজন কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, ঈদের আনন্দ উৎসবকেও বাকশালীকরণ করা হয়েছে। ঈদের দিন মানুষ হত্যার উন্মাদনার মধ্য দিয়েই আওয়ামী ক্যাডাররা উৎসব পালন করছে।

কোরবানির পশুর চামড়া এবার বিক্রি হয়নি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আড়তদাররা কোরবানির চামড়া ফিরিয়ে দিয়েছে। এটাও সিন্ডিকেটবাজদের কারসাজি।

বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষ্যে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে প্রধান শরণার্থী  সমস্যা রোহিঙ্গা। প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নিপীড়নের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখন মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গতকালও পাহাড় ধসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১ জন মারা গেছে। কিন্তু তাঁবেদার নতজানু সরকার তাদের নিজ দেশে ফেরাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি।

বাংলাদেশের কোটি-কোটি যুবক এখন বেকার বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, শুধু ভিন্ন মতের কারণে অনেক তরুণ যুবক কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভূমধ্যসাগরসহ বিভিন্ন সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেরই সলিল সমাধি হচ্ছে। বহুসংখ্যক বাংলাদেশিরা এখন নিজ দেশেই পরবাসী।

এএইচআর/এমএ