চাঁদা না দেওয়ায় হাসপাতাল পরিচালককে ছাত্রলীগ নেতার হুমকি
ঈদের আগে চাঁদা না দেওয়ায় সুমনা হাসপাতালের পরিচালক ইমাদুল উদ্দিন আহমেদকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম এস এম আকতার হোসাইন। তিনি জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৫ জুন) সুমনা মেডিকেলের পরিচালক ইমাদুল উদ্দিন আহমেদ এ অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, হাসপাতাল থেকে চাঁদা নেওয়ার জন্য সুমনা হাসপাতালে জবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী বাবুকে পাঠান সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন ও রবিউল ইসলাম রবিকে পাঠান সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি। এরপর হাসপাতালের পরিচালক ইমাদুল উদ্দিন তাদের চাঁদা না দিলে পরে ফোনে সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন গালিগালাজসহ হুমকি দেন। এ বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সুমনা হাসপাতালের পরিচালক ইমাদুল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগে এতো চাঁদাবাজি হয়নি। কমিটিতে আসার প্রথম থেকেই ওরা ডিস্টার্ব করে যাচ্ছে। মেহেদী বাবু ও কালো করে একটি ছেলেকে পাঠিয়েছিল। আকতারও ফোন দিয়ে গালিগালাজ করেছে। তাকে (আকতার) হয়ত অন্যভাবে বলেছে (বাবু)। এটা হিট অব মোমেন্টে করেছে হয়ত। আমরা এমনিই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় ছাড় দিই। তার উপর এসব খারাপ লাগে।
কত টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অ্যামাউন্ট বলেনি। চাঁদা চেয়েছিল। না দেওয়ায় আকতার ফোন করে গালি দিয়েছে। পরে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি আমাকে ফোন দিয়ে কথা বলেছে, ওরা একটু নরম হয়েছে। মীমাংসার কথা বলেছে। এমন ঘটনা প্রায়েই ঘটে।
এ ঘটনায় কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ইমাদুল উদ্দিন আহমেদ শঙ্কা জানিয়ে বলেন, এটা করলে হবে কী? এখানে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তো। দেখা যাবে পরে ঝামেলা করবে অন্যরা এসে।
এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে একাধিকবার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি।
জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, মেহেদী বাবু ঢাকায় নেই। সে বাড়িতে। ইমাদ সাহেবের ফোন নম্বর আমার কাছে নেই। কোনো যোগাযোগও নেই। আমি তাকে ফোন করিনি। আমি এক-দেড় বছর সুমনাতে যাই না।
জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে চাঁদার কোনো স্থান নেই। আমরা এগুলোর প্রশ্রয় দিই না। হয়ত আমাদের নাম ভাঙিয়ে কেউ যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি জবি ছাত্রলীগের কমিটির ঘোষণা করা হয়। ৬ মাস পর পুরান ঢাকায় চাঁদাবাজি, ক্যাম্পাসের সকল টেন্ডারে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ ও নারী কর্মীদের রিসোর্টে নেওয়ার মতো কেলেঙ্কারির ঘটনায় ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়। পরে কমিটির স্থগিত আদেশ তুলে নেওয়া হয়। এরপর দেড় বছর আগে জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নতুন কমিটি হয়নি ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটে।
এমএল/এসকেডি