মানবতারবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়েত ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, এখন তরুণরা পড়াশোনা করে না। আমি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করি না। কিন্তু তাদের রাজনীতির যে কৌশল তা অত্যন্ত বিজ্ঞান সম্মত। ঠিক কমিউনিস্ট পার্টির মতো। তাদের স্টাডি সেল আছে। তাদের যে ছাত্র-শিবির আছে, প্রত্যেককে লেখা-পড়া করতে হয়। সেখান থেকে উত্তর দিতে হয়। নিজেরা বই-পত্রিকা প্রকাশ করে। জ্ঞানের চর্চা ছাড়া আপনি সফল হতে পারবেন না। এটা অত্যন্ত সত্য কথা।

রোববার (২ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, পত্রিকা খুললে শুধু লুট আর লুট। যারা রাষ্ট্রের বড় দায়িত্বে, তারা লুটপাট করছে। সংসদ সদস্য চোরাচালানে জড়িত। শেয়ারবাজারে রথী-মহারথীরা লুটপাট করছে। কেউ দরবেশ, কেউ সন্ন্যাসী বেশে এসব কাজের সঙ্গে জড়িত। কোনও জবাবদিহি নেই, চিন্তা নেই। একটাই ভাবনা, ক্ষমতায় থাকতে হবে। সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে রক্ষী তৈরি করেছে।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঋণের বোঝায় ডুবিয়ে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মাথাপিছু ঋণ এখন ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন শর্তে যে সব ঋণ নেওয়া হচ্ছে, সুস্থ মানুষ ও দেশপ্রেম থাকলে এগুলো করতে পারতো না। তারা এই দেশের মানুষ না, বর্গি। লুট করে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে। যখন দেখবে ক্ষমতায় আর থাকতে পারবে না, তখন বিদেশে চলে যাবে। 

বিএনপির মহাসচিব দাবি করেন, আমার মার খাচ্ছি, জেলে যাচ্ছি। এখন সবাই মিলে একসঙ্গে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছি। মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই। এই সরকারকে পরাজিত করা সময়ের ব্যাপার।

সব প্রতিকূলতা থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে জিয়াউর রহমানকে জানতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করলে হবে না। জেনেশুনে রাজনীতি করতে হবে। জিয়াউর রহমানকে বুঝতে হলে তার কাজের গভীরে যেতে হবে। এখন জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা বলা যায় না। সত্য বললে রাষ্ট্রদোহিতার মামলা দিয়ে দেওয়া হয়।

জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্র ও জাতি গঠন শুরু করেছিলেন বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক নূরুল আমিন ব্যাপারী। তিনি বলেন, জ্ঞানভিত্তিক আলোকিত সমাজ গড়তে শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। শিক্ষার মাধ্যমে দেশকে উন্নত করতে চেয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, রাজনীতিকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুঁড়ি থেকে ইমার্জিং টাইগারে পরিণত করেছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম বলেন, বই-পুস্তক থেকে জিয়াউর রহমানকে মুছে ফেলা হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে জিয়াউর রহমান সম্পর্কে জানাতে তার জীবন ও কর্ম নিয়ে ছোট ছোট বই প্রকাশ করা হবে। প্রবেশ না করতে দিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে সেগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

এএইচআর/এসএম