করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে দুয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ‘গত এক বছর ম্যাডাম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। ওই সময় কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেননি। এখন যেহেতু ম্যাডাম কোভিড থেকে ভালো হয়েছেন তাই বাকি পরীক্ষাগুলো করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে ম্যাডামকে অস্থায়ীভাবে কেবিনে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে বাসা থেকে আনা নেওয়া ও বের করা কষ্ট। তাই ভর্তি করা হয়েছে। কালকে (বুধবার) আরও পরীক্ষা করে হবে।’

খালেদা জিয়াকে কতদিন হাসপাতালে থাকতে হবে জানতে চাইলে ডা সিদ্দিকী বলেন, ‘মিনিমাম এক-দুই দিন তাকে হাসপাতালে থাকতে হবে।’

মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার করোনা আক্রান্তের ১৯ দিন হয়েছে বলে জানিয়ে ডা. সিদ্দিকী বলেন, ‘অন্যান্য প্যারামিটারে দেখা গেছে যে তিনি ভালো হয়েছেন। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল তার ফুসফুসের সিটি স্ক্যান করা। তার পাশাপাশি আরও কিছু পরীক্ষা করা, যেগুলো আগে করতে পারিনি। সেগুলো করা দরকার ছিল। সেজন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে এনেছি।’

খালেদা জিয়ার বেশকিছু পরীক্ষা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে ডা. সিদ্দিকী বলেন, ‘এরমধ্যে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। কিন্তু আরও কিছু পরীক্ষা করা বাকি রয়েছে। রাতে হাসপাতালে সবগুলো সার্ভিস সক্রিয় ছিল না। তাই যে পরীক্ষাগুলো বাকি আছে সেগুলো করব। পরীক্ষাগুলোর রিপোর্ট রিভিউ করে বাসায় নিয়ে যাব।’

তিনি আরও বলেন, কোভিডের যে বিপদ, ‘যেগুলো আমি সব সময় বলি তা হলো দ্বিতীয় সপ্তাহ। সেই সপ্তাহটা সুন্দরভাবে পার হয়েছে। আজকে তার সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট আগের চাইতে আরও ভালো ও ক্লিয়ার। সে-দিক থেকে তিনি কোভিডের থেকে আলহামদুলিল্লাহ সব দিক দিয়েই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এখন আমার অন্যান্য যে রুটির পরীক্ষাগুলো, যা গত এক-দেড় বছর করতে পারিনি সেগুলো করব।’

আজকের পরীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল কি না জানতে চাইলে ডা. সিদ্দিকী বলেন, ‘তার অবস্থা স্থিতিশীল, অনেক ভালো। আপনারা তো দেখেছেন তিনি যথেষ্ট ভালো।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডামের সঙ্গে তার গৃহকর্মী ফাতেমা ও অন্য একজন নারী স্টাফ হাসপাতালে থাকবেন।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে নয়টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে খালেদাকে বহনকারী গাড়িটি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়। পরে রাত ১০টা ১০ মিনিটের দিকে গাড়িটি হাসপাতালে পৌঁছায়। 

এর আগে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত ডাক্তার ডা. জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, ম্যাডামের কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

গত শনিবার খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার কথা জানিয়ে তার চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকী গণমাধ্যমে বলেন, তার আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। 

গত ১৫ এপ্রিল রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করা হয়। তারপর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বলেন, সিটি স্ক্যানে খালেদা জিয়ার ফুসফুসে খুবই সামান্য সংক্রমণ হয়েছে। যা সত্যিকার অর্থে মাইল্ড পর্যায়েও পড়ে না। তাই খালেদা জিয়ার আগের ওষুধের সঙ্গে নতুন ওষুধ অ্যান্টিবায়োটিক যুক্ত করা হয়। 

এর আগে গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তার বাসভবন ফিরোজার আরও আটজন ব্যক্তিগত স্টাফও আক্রান্ত হন। বর্তমানে তিনিসহ চারজন করোনা আক্রান্ত আছেন।

এএইচআর/ওএফ