পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার পরিবর্তন করতে হলে বিএনপিকে আগামী ২০২৯ সালের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখন জনগণ যাদের ভোট দেবে তারাই সরকার গঠন করবে। এতদিন ধরে বিএনপি যে আন্দোলন করেছে এগুলো সব পরীক্ষায় তারা ফেল করেছে। এখন তারা আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুক, আরও বেশি করে পড়াশোনা করুক, তারপর আমরা দেখব তারা কি করে। অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করার ক্ষেত্রে সরকার কাউকে বাধা দেবে না। কিন্তু বিএনপি ইতোপূর্বে আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা নৈরাজ্য করেছে, সেগুলো আর করতে দেওয়া হবে না।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি শিরীষ তলায় সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় ‘মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পক্ষে আর কোনো রোহিঙ্গাকে গ্রহণ কিংবা আশ্রয় দেওয়া সম্ভব না। মিয়ানমার সীমান্তে ইতোপূর্বে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, আশা করব সেটির আর উদ্ভব হবে না। আমাদের দেশে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। প্রতিবছর ৩৫ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করে অর্থাৎ প্রতিবছর এ সংখ্যাটা বাড়ছে।

তিনি বলেন, যাদের ইতোপূর্বে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাদের কীভাবে ফেরত পাঠানো যায় আমরা সেটি নিয়েই কাজ করছি। যুক্তরাষ্ট্রসহ রাষ্ট্রগুলোর সহায়তা কামনা করেছি, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে মিয়ানমারের সরকারের ওপর যাতে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়। সেজন্য ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চায়নাসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমরা আলাপ আলোচনা করেছি।

মিয়ানমারের জান্তা সরকার সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে তারা আবারও অভিযান চালাবে, অনেক রোহিঙ্গা সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে, সরকার এ পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেবে– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন কয়দিন আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মিউনিখে সিকিউরিটি কনফারেন্সে গিয়েছিলেন, সেখানেও আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের যে প্রতিনিধি দল আসছে, এটি আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করার ক্ষেত্রে সহায়ক। সেখানে নিশ্চিতভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আমরা আলোচনা করব।

তিনি বলেন, রাখাইনে অভিযান পরিচালনা করাটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় কিন্তু সেটির কারণে আমাদের এখানে উত্তেজনা ইতোপূর্বে তৈরি হয়েছে এবং সেখানকার মর্টারশেল আমাদের দেশে এসে পড়েছে, দুইজন নিহতও হয়েছে। ৩৩০ জনের মতো তাদের সেনা ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য আমাদের দেশে এসেছিল, তারা আবার তাদের ফেরত নিয়ে গেছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে সেটির প্রতিবাদ আমরা জানিয়েছি। সুতরাং আমরা আশা করব ইতোপূর্বে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেটি আবার উদ্ভব হবে না।

চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অমর একুশে বইমেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। স্বাগত বক্তব্য দেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

এমআর/এসএসএইচ