ভাষা আন্দোলনের সময় যে লক্ষ্য নিয়ে ভাষা শহীদরা জীবন দিয়েছিলেন আজও তা বাস্তব রূপ পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, দেশের জ্ঞান চর্চার স্বার্থে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ছিলো তা হয়নি। 

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আলোচনা সভায় এবি পার্টির নেতারা বলেন, রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে যেভাবে এদেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছিল, জীবন দিয়ে অধিকার আদায় করেছিলো সেই আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আজও দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। 

এসময় নেতারা বাংলা ভাষার প্রকৃত মর্যাদা রক্ষায় সরকারের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তারা বাংলা একাডেমির দলীয়করণ ও বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে বানান বিতর্ক, ভাষাগত বিকৃতি নিয়ে বাংলা একাডেমির তীব্র নিন্দা জানান বক্তারা। 

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি একটা বইমেলার আয়োজন করে মাসব্যাপী। সেখানে কতটুকু বাংলা চর্চা হচ্ছে তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সেখানে ভিন্নমতের বা সরকার বিরোধী মতের লেখক বা বই মেলায় স্থান পায় না। 

তিনি ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে তারা জীবন দিয়েছিলেন আজ বাহাত্তর বছর পর এসেও তা বাস্তব রূপ পায়নি। দেশের জ্ঞান চর্চার স্বার্থে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ছিলো তা হয়নি। সেই লক্ষ্য পূরণেই এবি পার্টি এমন একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে চায় যেখানে বাংলায় জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় কোনো বাধা থাকবে না। 

বলেন, মাতৃভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য যে আন্দোলন হলো, আমাদের ভাইয়েরা জীবন দিলো অথচ ভারত উপমহাদেশে থেকে প্রায় আড়াই শ ভাষা হারিয়ে গেছে। শুধু মাত্র একটি দিনকে উদযাপন বা শহীদ মিনারে লৌকিক ফুল দিয়েই ভাষার মর্যাদা রক্ষা পাবেনা। শিক্ষাক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্রে ভাষায় সঠিক ব্যবহার ব্যতিরেকে ভাষা টিকে থাকেনা। যার ফল আমাদের নতুন প্রজন্ম যারা সঠিকভাবে বাংলা কিংবা অন্য কোন ভাষা কোনটাই তারা শিখতে পারছেনা। 

সভায় উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুবপার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, সহকারী সদস্যসচিব শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে এবি পার্টির শিল্পীবৃন্দ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। 

জেইউ/এমএসএ