আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচন শেখাতে হবে না। এ দেশে ভালো নির্বাচনের প্রক্রিয়া শেখ হাসিনা চালু করেছেন। এই নির্বাচনে আমরা দেখলাম সরকারি দলের একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ও কয়েকজনকে শোকজ করা হয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা নতুন দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বহুদেশ নির্বাচিত সরকারকে নিয়ে প্রশংসা করছে। শুধু বাংলাদেশের একটি দল ছাড়া। নির্বাচনে এলে হেরে যাবে এই কারণে বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। এই নির্বাচনকে যারা বয়কট করেছে তারা অনেক কথা বলেছে।

টিআইবির বক্তব্যের ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন পাতানো ছিল না। নামিদামি দেশ পর্যবেক্ষণ করেছে। এমনকি নির্বাচনের পর বিভিন্ন দেশ অভিনন্দন জানাল কেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও অভিনন্দন জানিয়েছেন সরকারকে।

তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয়েছে। বিরোধী দলের নির্বাচন বয়কট করায় নতুন রণকৌশল নিতে হয়েছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য বড় অংশ। জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে রণকৌশল নিতে হয়েছে, যার সোনালী ফসল ঘরে তুলেছি। দুএকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে এখন অনেক কথাই বলবে।

কাদের বলেন, বিএনপির আস্ফালন কোথায় গেল? জনগণকে নিবৃত করার চেষ্টা করেছে। অনেক দেশ পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে, এছাড়া এ নির্বাচন নিয়ে কোনও কথা বলার নেই। ভালো নির্বাচন হয়েছে সে প্রশংসা আসছে। কেবল তারা নির্বাচনকে গ্রহণ করতে পারছে না। তারা এখন বলছে সংসদ অবৈধ।

সেতুমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের মতো প্রহসনের নির্বাচন, মাগুরার মতো নির্বাচন করলেই কি নির্বাচন বৈধতা পাবে? বিএনপিকে অন্তত আওয়ামী লীগকে নির্বাচন শেখাতে হবে না। দেশে ভালো নির্বাচন করেছেন শেখ হাসিনা। দেশে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে, সরকারি দলের প্রার্থীকেও শোকজ করেছে কমিশন। গণতন্ত্রের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা।

কাদের বলেন, সংবিধানের নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকার যেদিন গঠিত হয়েছে তার পেছনের তিনমাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সাংবিধানিক এ বিধানেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির মানুষ নেই। তাই নির্বাচনে আসলে হেরে যাবে। এই চরম হতাশগ্রস্ত শিবিরে পরিণত হয়েছে বিএনপি। যে দলের মধ্যে গণতন্ত্র নেই সেই দল কীভাবে দেশের মানুষকে গণতন্ত্র দেবে। এই বিএনপি তাদের সাত ধারা বাতিল করেছিল। এই বিএনপি অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে নেতা বানিয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্তকে ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানাতে বিএনপি তাদের সাত ধারা বাতিল করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি নিজেদের অফিসে তালা মেরে বলে সরকার তাদের অফিসে লাগিয়েছে। আবার তাদের অফিসের তালা তারাই ভেঙে গেছে। তারা অফিসে তালা লাগাতে পারে আবার ভাঙতেও পারে। সংবিধান ভাঙা বিএনপির অফিসের তালা ভাঙার মতো না। ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনী ট্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী পাঁচ বছর পর এই ট্রেন চালু হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দীসহ অন্যান্য নেতারা।

এমএসআই/পিএইচ