৭ জানুয়ারির পর মোহাম্মদপুরে কোনো গ্যাংয়ের অস্তিত্ব থাকবে না
কিশোর গ্যাং নির্মূলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘কোনো কিশোর গ্যাং, মাঝারি গ্যাং কিংবা বড় গ্যাং এই এলাকায় থাকবে না। পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, আগামী ৭ জানুয়ারির পর যদি কাউকে পাওয়া যায়, তাহলে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হবে।’
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান বাড়ি মালিক কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় প্রায় ১০ হাজার ভোটার সম্বলিত হাউজিং সোসাইটির সুধিসমাজের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, পানির পাম্প নির্মাণ, খেলার মাঠ নির্মাণ এবং সন্ত্রাস নির্মূলসহ কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতের অবসান কামনা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘মোহাম্মদপুর সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল, আমি সেই সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করেছিলাম। যে মোহাম্মদপুর চাঁদাবাজ আর মাদককারবারীদের স্বর্গরাজ্য ছিল... আমি তাদের বিতাড়িত করেছিলাম। ৫ বছর আমি ছিলাম না। এখন দেখা দিয়েছি কী? কিশোর গ্যাং... আমি কোনো কিশোর গ্যাং, মাঝারি গ্যাং, কোনো বড় গ্যাং এই এলাকায় থাকতে দেব না।’
তিনি বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, তাদেরকে পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, আগামী ৭ জানুয়ারির পর যদি কাউকে পাওয়া যায়, তাদের হাত-পা ভেঙে দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হবে। আপনারা এলাকাবাসী আমার সঙ্গে থাকবেন। আপনারা রাতে বাসাবাড়িতে নিশ্চিন্তে ঘুমাবেন। আর আমি রাতে আপনাদের রাস্তাঘাট পাহারা দেব। কে কত বড় সন্ত্রাসী, কে কত চাঁদাবাজ, কারা কত বড় কিশোর গ্যাং, আপনাদের সাথে এসব নিয়ে মোকাবিলা করব।’
ভোটারদের দলবেঁধে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা-১৩ আসনের নৌকার এই প্রার্থী বলেন, আপনারা ৭ জানুয়ারি ভোট প্রদানের মাধ্যমে পরিষ্কার জানিয়ে দেবেন... আমরাই আমাদের সরকার গঠন করার মালিক, এ দেশের জনগণই যথেষ্ট এ দেশের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা কোনো শক্তির কাছে মাথা নত কর না। আমরা কোনো বহিঃশক্তির কাছে মাথা নত করব না। কোনো বহিঃশক্তির রক্তচক্ষু আমরা মেনে নেব না।
‘আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন গণতন্ত্র রক্ষার নির্বাচন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার নির্বাচন এবং বাংলাদেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন। আগামী নির্বাচন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনিমার্ণের নির্বাচন।’
‘আমরা বিজয়ী জাতি। কারো দয়া-দাক্ষিণ্যে স্বাধীনতা অর্জন করিনি। আমরা বাঙালি জাতি রক্ত দিয়ে এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। দুই লাখ মা-বোন তাদের পবিত্র সতীত্ব বিকিয়ে দিয়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন। কাজেই কারো হস্তক্ষেপ আমরা আমাদের দেশে করতে দেব না।’
ভোটারদের উদ্দেশে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে নতুন কোনো মানুষ নই। আমি ২০০৮ সাল থেকে দশ বছর এই এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আপনারা আমাকে বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে নির্বাচিত করেছিলেন। আমি চেষ্টা করেছি আমাদের সর্বস্ব দিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে।’
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদ উদ্যান হাইজিং বাড়ি মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলম হোসেন। আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভুঁইয়া, মোহাম্মদ থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল সিদ্দিকী তুহিন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদসহ বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটির নেতারা।
এমএসআই/কেএ