শ্রম আইনের মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কারাদণ্ডের রায় প্রসঙ্গে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেছেন, মামলার মেরিট অত্যন্ত দুর্বল। এই মামলাটি মূলত একটি বিচারিক হয়রানি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ও বর্তমান দেশে যে শাসক গোষ্ঠী আছে... তাদের জন্য ড. ইউনূস কোনোভাবে চ্যালেঞ্জে পরিণত হতে পারেন, সে আশঙ্কায় হয়রানিমূলক ও প্রসহনের মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে।

সোমবার (১ জানুয়ারি) পল্টনে শ্রম আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। 

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, ড. ইউনূস বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী এবং দেশের একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে এ সম্মান বয়ে এনেছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ও বর্তমান শাসক দলের জন্য কোনোভাবে চ্যালেঞ্জে পরিণত হতে পারেন... সেই আশঙ্কা থেকে তাকে এই প্রহসনমূলক মামলায় হয়রানি করতেই আসামি করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, এই বিচারিক প্রক্রিয়া বা যে কারণে করা হচ্ছে... তা কোনোভাবে ফৌজদারি প্রকৃতির কোনো বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়েই না। এটা সর্বোচ্চ দেওয়ানি প্রকৃতির মধ্যে পড়তে পারে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তার সাজা বা বিচার কোনো কিছুই হওয়া উচিত নয়।

এবি পার্টির এই নেতা বলেন, আমরা আজকে এবি পার্টির পক্ষ থেকে এখানে দাঁড়িয়েছি সহানুভূতি জানানোর জন্য। এটা বলার জন্য যে, আপনি (ড. ইউনূস) বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে এনেছেন। আপনি একা নন। সচেতন নাগরিক ও রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা এখানে এসেছি আপনার পাশে দাঁড়ানোর জন্য। সচেতন নাগরিকরা আপনাকে সমর্থন দিয়ে পাশে আছে। 

এর আগে, বিকেল তিনটার দিকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা। তবে আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ আসামিদের ১ মাসের জামিন দেওয়া হয়।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। 

আদালতে উপস্থিত ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ, রাজনীতি-বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন। বাইরে ড. ইউনূসের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করে ও সমর্থন জোগাতে অবস্থান নেন এবি পার্টির নেতারা।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

জেইউ/এমএইচডি