আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি একটি পরগাছা, এই পরগাছাকে নির্বাচন উপলক্ষ্যে রাজনীতি থেকে অস্তিত্বহীন করে দিতে হবে; তাদেরকে দেশের রাজনীতি থেকে মুছে ফেলতে হবে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অক্টোবরের ২৮ তারিখে নয়াপল্টনের রাস্তা থেকে পালিয়ে গেল বিএনপি। তাদের এক দফা গেল কোথায়? কোথায় গেল ৫৪ দল? কোথায় গেল ৩২ দফা?

তিনি বলেন, এরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মানে না, স্বাধীনতা মানে না। একুশে আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য এরা গ্রেনেড মেরেছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপি পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, পুলিশের হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। তারা গাজীপুরে ট্রেনের লাইন কেটে মানুষকে রক্তাক্ত করেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে ঘোড়াও হাসে। বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে ঘোড়াও ডিম পাড়ে। বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।

তিনি বলেন, বিএনপি শেখ হাসিনাকে হটাতে চায়। তাদের এখন লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে হটাও। বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবার তারা শেষ করেছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যদি রক্ষা করতে হয়, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হয়, তাহলে ক্ষমতার মঞ্চে আমরা শেখ হাসিনা আবারও চাই। বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প কেউ নেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প কিছু নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে যারা শেখ হাসিনাকে ছোট করে, শেখ হাসিনাকে হটাতে চায়। এবারের নির্বাচনে দলে দলে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চাই– আমরা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে চাই। আমাদের নেতা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে যার হটাতে চায়, আমরা তাদের হটিয়ে দেব।

বিএনপির ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং মামলায় তারেক জিয়া ২০০৭ সালে পালিয়ে গেছে। সেই তারেক রিমোট কন্ট্রোলে বিএনপিকে চালায়। লন্ডনে বসে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়। সে মনে করেছে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলার মানুষ অসহযোগ আন্দোলন করেছে। তার কথায়ও দেশের মানুষ অসহযোগ আন্দোলন করবে। তারেক ও বিএনপিকে বাংলাদেশের মানুষ অসহযোগিতা করবে। অসহযোগ করে বাংলাদেশের মানুষ বিএনপি নামক পরগাছাকে রাজনীতি থেকে হটিয়ে দেবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই দেশ তোমার বাপ-দাদার দেশ নয়। তারেক রহমান বলে বিদ্যুতের, গ্যাসের, পানির বিল বন্ধ করে দেবে। যারা বিল বন্ধ করতে যাবে, তাদের বিদ্যুৎ-গ্যাসের লাইন কেটে দেওয়া হবে। যদি তারা ব্যাংক লেনদেনে সমস্যা করতে চায়, তাহলে ব্যাংক তাদের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দেবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু ব্যবসায়ীর তারেকের কথা শুনে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপিকে যারা অর্থ দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে, তাদের অর্থ বন্ধ হয়ে যাবে। অসহযোগের উদ্দেশ্যও ভুয়া। বিএনপির অবরোধ ও হরতাল ভুয়া। রাস্তায় গাড়ি, মানুষ, যানজট লেগেই আছে, এটা নাকি হরতাল-অবরোধ। বিএনপির সবকিছুই ভুয়া।

তিনি বলেন, বিএনপি ফাউল করে লাল কার্ড খেয়ে খেলা থেকে বাদ। নির্বাচনে ১৮৯৬ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছে। এই প্রার্থীদের খেলা এখনো আছে। সবাই ভোটকেন্দ্রে আসবেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ লড়াই বাংলাদেশের অস্তিত্বের লড়াই। এই লড়াই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচিয়ে রাখা লড়াই। এই লড়াই বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বাঁচানোর লড়াই, এই লড়াই বাংলাদেশের সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার লড়াই। এই লড়াইয়ে সরকারকে বাঁচাতে হবে, দেশকে বাঁচাতে হবে, নৌকাকে বাঁচাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, খেলা হবে দণ্ডিত আসামি তারেকের বিরুদ্ধে, খেলা হবে সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে, খেলা হবে বিএনপির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। ফাইনাল খেলা হবে ৭ তারিখে। সারা বাংলাদেশে সেই খেলায় বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা কোনো বিরোধ সৃষ্টি করবেন না। এখানে কেউ নেতা না, আমরা সবাই শেখ হাসিনার কর্মী। আপনারা ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।

এমএসআই/এসএসএইচ