আওয়ামী লীগের প্রতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করে এবি পার্টি বলেছে, বাংলা বসন্তের জন্য কোনো পরাশক্তির সহযোগিতা বা পরিকল্পনা মুখ্য নয় বরং দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত গণসংগ্রামই ঢাকার বুকে ‘বাংলা বসন্ত’কে অনিবার্য করে তুলেছে।

দলটির নেতারা বলেছেন, বৈষম্য ও অধিকার হরণের বিরুদ্ধে আরব বসন্তের বহু আগে বায়ান্ন, বাষট্টি ও উনসত্তর সালে এ ভূখণ্ডে বার বার গণআন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধ ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মূল প্রেরণাই ছিল গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম। গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গায়ের জোরে ৭ জানুয়ারির প্রহসনমূলক নির্বাচন করলে গণমানুষের অভ্যুত্থান ও ‘বাংলা বসন্ত’ কেউ ঠেকাতে পারবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় বিজয়নগরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ‘ক্ষুব্ধ জনতার মিছিল’ বের করে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। মিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে নেতারা এমন মন্তব্য করেন।

‘ক্ষুব্ধ জনতার মিছিল’টি এবি পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, বিজয়নগর, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিজয়-৭১ চত্বরে এসে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলছি, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন একটি প্রহসন ও জনগণের টাকা অপচয়ের নির্বাচন, আমরা এ নির্বাচন মানি না। জনগণকে বলবো আপনারা এ নির্বাচন বর্জন করুন, কেউ আপনারা ভোট দিতে যাবেন না।

এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী, মানুষ নিজের পছন্দ মত খাবার কিনতে পারছে না। সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে তামাশার নির্বাচন করছে।

দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা হলো শক্তের ভক্ত নরমের জম। গণঅভ্যুত্থান শুরু হলে এখনকার নেতা-মন্ত্রীদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

রাশিয়ান পররাষ্ট্র দপ্তরের আরব বসন্ত ঘটার আশঙ্কা প্রসঙ্গে তিনি দাবি করে বলেন, বাংলা বসন্তের জন্য কোনো পরাশক্তির সহযোগিতা বা পরিকল্পনা মুখ্য নয় বরং দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত গণসংগ্রামই ঢাকার বুকে ‘বাংলা বসন্ত’কে অনিবার্য করে তুলেছে।

যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমেরিকাসহ আমাদের পশ্চিমা বন্ধু রাষ্ট্রগুলো বার বার অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা, পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়িত না হলে পোশাক রপ্তানি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। অর্থনীতিতে ধস নামবে। আমরা বার বার সতর্ক করার পরেও সরকার একটি একতরফা নির্বাচন আয়োজন করেছে।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুব পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, আব্দুল বাসেত মারজান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকনসহ অন্যান্যরা।

জেইউ/পিএইচ