তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা যখন স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, তখন পাকিস্তানিদের অনেকে পরাজয়ের পর নিজেদের আত্মতুষ্টির জন্য বলেছিল, কালো-বেঁটে, বোকা মানুষ। বাঙালিরা আমাদের থেকে ভাগ হয়ে গেছে ভালোই হয়েছে। কিন্তু, আজ পাকিস্তানে আলোচনা হয় দয়া করে আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। এখন পাকিস্তান বাংলাদেশ হতে চায়।  

তিনি বলেন, আজ পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। পাকিস্তান এখন বাংলাদেশ হতে চায়। এখানেই হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ রচনার এবং তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার সার্থকতা। 

আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত র‌্যালিপূর্ব পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান থেকে র‌্যালিটি শুরু হয়ে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার প্রদক্ষিণ করে তাপবিদ্যুৎ গেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ নির্বাচনমুখী। মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। এটি নির্বাচন বর্জনকারী ও প্রতিহতকারীদের মুখে চপেটাঘাত। আগামী ৭ তারিখে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়ে নির্বাচন বর্জনকারীদের মুখে কালিমা লেপন করবে এই দেশের জনগণ। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই রাঙ্গুনিয়ার অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে। অনেককে কর্ণফুলী নদীর তীরে দাঁড় করিয়ে গুলি করে নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রঘোনায় পাকিস্তানিদের ক্যাম্প থেকে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। পদুয়া ইউনিয়নে একদিনে ১২০০ বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ রকম রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় বাড়িঘর জ্বালানো হয়েছে। 

নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বোয়ালখালী অংশের উন্নয়নের নানা চিত্র তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ আজ বদলে গেছে। এই রাঙ্গুনিয়ার চিত্র আপনারা একটু মনে করে দেখুন। ১৫ বছর আগে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার শেষ প্রান্ত থেকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার শেষ প্রান্তে যেতে সকালে শুরু করলে বিকেল বেলা গড়িয়ে যেত। সঙ্গে পোটলা নিয়ে যেতে হতো। সড়কগুলোর এমন করুণ অবস্থা ছিল মানুষের কোমর ব্যথা হয়ে যেত। আর বর্তমানে রাঙ্গুনিয়ার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টায় পৌঁছানো যায়। 

তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রামের ছেলে আর শহরের ছেলেদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বরং গ্রামের ছেলেগুলো আরও বেশি স্মার্ট। গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে টেলিভিশন-ফ্রিজ ও ইন্টারনেটের লাইন, এগুলো আগে ছিল না। এগুলো সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে। 

ড. হাছান বলেন, একজন কাজের লোক ডিউটি করে আট ঘণ্টা। আর আমি সময় দিই ১৬ ঘণ্টা থেকে ২০ ঘণ্টা। সকাল আটটায় ঘুম থেকে উঠে রাত ২টার আগ পর্যন্ত কোনো ঘুম নেই। একজন রাখাল যেভাবে খাটে, আপনাদের সন্তান হিসেবে আমি সেই পরিমাণ খাটাখাটি করি। শুধু আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ জানাবো— এই রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী অংশে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে, এগুলো আপনারা মাথায় রাখবেন। ৭ তারিখ মা-বোন, বউ-বাচ্চা ও নাতিদের নিয়ে ভোট সেন্টারে যাবেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মো. ইদ্রিছ আজগর, মুহাম্মদ আলী শাহ, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খান, শফিকুল ইসলাম, আবদুল মোনাফ সিকদার ও ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার। 

এমআর/এনএফ